প্রকাশ: ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৫৮
হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার রশিদপুর গ্যাসক্ষেত্রের ৩নং কূপে নতুন গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতের দিকে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মাহবুবুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সূত্রে জানা যায়, কূপটির সম্প্রতি ওয়ার্কওভার কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করেছে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড (এসজিএফএল)। এর আগে গত ৪ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক মো. ফরিদুর রহমান ও উপজেলা সহকারী কমিশনার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এসজিএফএল সূত্রে জানানো হয়েছে, এই কূপ থেকে আগামী ১০ বছরে প্রায় ২৫ দশমিক ৫৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন সম্ভব। এছাড়াও কূপটি থেকে কনডেনসেটও পাওয়া যাবে। বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী (প্রতি ঘনমিটার এলএনজি ৬৫ টাকা) কূপ থেকে আনুমানিক ৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকার গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব। প্রতিষ্ঠানটি আশা করছে, এটি দেশের জ্বালানি চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
কূপটির ওয়ার্কওভার কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করতে এসজিএফএল-এর দক্ষ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এবং বাপেক্সের কারিগরি টিম যৌথভাবে কাজ করেছেন। বর্তমানে সংস্থার আওতায় সিলেট-১০এক্স, সিলেট-১১, ডুপিটিলা-১, কৈলাসটিলা-৯, রশিদপুর-১১ ও রশিদপুর-১৩ নম্বর কূপ খনন এবং কৈলাসটিলা-৯ ও বিয়ানীবাজার-২ নম্বর কূপে ওয়ার্কওভার কার্যক্রম চলছে। এসব কার্যক্রম শেষ হলে দেশের গ্যাস উৎপাদন আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, দেশের জ্বালানি চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল রশিদপুরে দৈনিক ৩ হাজার ৭৫০ ব্যারেল ক্ষমতাসম্পন্ন কনডেনসেট ফ্র্যাকশনেশন প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়। এই প্ল্যান্ট থেকে প্রতিদিন পেট্রোল, ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন ও এলপিজি উৎপাদিত হচ্ছে।
স্থানীয় এবং কেন্দ্রীয় কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করেছেন, নতুন গ্যাস আবিষ্কার দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তারা মনে করেন, এই কূপের কার্যক্রম দেশের অর্থনৈতিক ও শিল্প উন্নয়নের জন্যও সহায়ক হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রশিদপুরের নতুন কূপে গ্যাস উত্তোলন সফল হলে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণে বিদেশ থেকে গ্যাস আমদানি কমানো সম্ভব হবে। এটি দেশের জ্বালানি খাতে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এসজিএফএল-এর কর্মকর্তা জানান, কূপের নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে, যাতে স্থায়ী ও ধারাবাহিক গ্যাস উৎপাদন নিশ্চিত করা যায়। এই আবিষ্কার দেশের জ্বালানি খাতকে আরও শক্তিশালী করবে এবং দীর্ঘমেয়াদে জাতীয় উন্নয়নে সহায়ক হবে।