রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে গত কয়েক সপ্তাহে আশঙ্কাজনক হারে জ্বর, সর্দি, কাশির প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘরে ঘরে সব বয়সি লোকজন ওইসব রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। আক্রান্ত হওয়া বেশীভাগ রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে চিকিৎসা নিচ্ছেন। শননিবার দুপুর পযর্ন্ত উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে প্রায় অর্ধশতাধিক ওইসব রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।
এদিকে উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে গড়ে ওঠা ফার্মেসীর দোকানগুলোতে প্যারাসিটামল, নাপা এন্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধের চাহিদাও বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি অনেকে গোপন রেখে পারিবারি ভাবে শতর্ক থেকে নিয়মিত ওষুধ সেবন করে আসছেন। হোম কোয়ারেন্টাইন ও বাড়ি লকডাউন পরিস্থিতি এড়াতে এবং করোনা আক্রান্ত কি না তা পরীক্ষা করতে চান না তারা। এতে করোনা সংক্রমণ বহুগুনে বেড়ে যাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় আক্রান্ত করোনা রোগীদের মধ্যে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি রয়েছেন ১৭ জন এবং বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছেন ২১৩ জন। এছাড়া আরোগ্য লাভ করেছেন ৩৭৮ জন। এ পর্যন্ত মোট নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ২ হাজার ৩৩৪ জন। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ হয়েছেন ৬৩১ জন।মারা গেছেন ২ জন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে , গত এক সপ্তাহ ধরে হঠাৎ করে পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘরে ঘরে নানা বয়সী লোকদের জ্বর, সর্দি ও কাশি দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের আক্রান্ত হওয়া ওইসব রোগীরা চিকিৎসা সেবা নিতে আসছেন। আবার অনেকে গোপনীয় ভাবে বাড়িতে থেকে ফার্মেসী থেকে ওষুধ এনে খাচ্ছেন।
হাসাপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের রমজান মাতুব্বর পাড়া গ্রামের গৃহিণী ছালমা আক্তার বলেন, গত ২ দিন ধরে তিনি জ্বরে ভুগছেন। স্থানীয় ফার্মেসী থেকে ঔষুধ খাওয়ার পর না কমায় তিনি স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ডাক্তার দেখাতে আসেন।
পৌর শহরের কুমড়াকান্দি এলাকার রফিকুল ইসলাম বলেন, তার মেয়ে রিতা বেগম (১৭) কয়েক দিন ধরে ঠান্ডা ও জ্বরে আক্রান্ত। পল্লী চিকিৎসক দেখিয়ে ওষুধ খাওয়ানো হয়েছে। কিন্তু ভালো না হওয়ায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে ডাক্তার দেখিয়ে ব্যবস্থাপত্র নিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, তার বাড়ির আশপাশে অনেকেরই সর্দি জ্বর রয়েছে। এ নিয়ে তিনি খুবই চিন্তিত রয়েছেন। কাটাখালির সোহান মিয়া বলেন তার ছেলে বাবুল (২০) গত ৪ দিন ধরে জ্বরে ভুগছেন। ফার্মেসী থেকে নেওয়া ওষুধ খেলে জ্বর ছাড়লেও আবার জ্বর আসছে। তাই হাসপাতালে আসা। চিকিৎসক তাকে দেখে ২টি পরীক্ষা করতে দেয় বলেন তিনি। বিসমিল্লাহ ফার্মেসীর ওষুধ বিক্রেতা বাবু আহমেদ বলেন, অন্য সময়ের তুলনায় বেশ কিছু দিন ধরে প্যারাসিটামল, নাপা ও এন্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ বিক্রি বেড়েছে। লোকজন এসে মুখে বলে ওইসব ওষুধ কিনছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নিতাই কুমার ঘোষ বলেন, সাধারণত আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে সর্দি কাশি জ্বরসহ বিভিন্ন রোগে মানুষ আক্রান্ত হয়ে থাকে। যেহেতু সময়টা ভালো যাচ্ছে না তাই যাদের জ্বরসহ সর্দি কাশি আক্রান্ত হয়েছে তাদের যত্রতত্র ঘোরাঘোরি না করা ভালো। তাছাড়া ঘরে পুরোপুরি বিশ্রামে থাকার পাশাপাশি তরল জাতীয় খাবার ও বিভিন্ন ফলমুল খাওয়া এবং চিকিৎসকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা নিতে পরামর্শে দেন তিনি। এখানে চিকিৎসা সেবার কোন ক্রুটি নেই। সাধ্যমতো আগত রোগীদেরকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন বলে জানান এ কর্মকর্তা।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।