স্ট্যাটাসের পর আবরারের ভাইয়ের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট গায়েব

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ১০ই অক্টোবর ২০১৯ ১০:০১ পূর্বাহ্ন
স্ট্যাটাসের পর আবরারের ভাইয়ের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট গায়েব

নিহত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের ছোট ভাই কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ এনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দেন। পোস্টের কিছু সময়ের মধ্যেই হাজার হাজার লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার হয়ে যায়। তবে এমন পোস্টের কয়েকঘণ্টা পরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে তার অ্যাকাউন্টটি গায়েব হয়ে যায়।
বুধবার রাত ১০টার দিকে কয়েকবার চেষ্টা করেও তার ফেসবুক পেজে ঢোকা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে কথা হয় নিহত আবরারের ছোট ভাই আবরার ফায়াজের সঙ্গে।
ফাইয়াজ জানান, তিনি নিজেই তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে রেখেছেন। তবে কেন বন্ধ করে রেখেছেন জানতে চাইলে ফায়াজ বলেন, সেটা বলা যাবে না। তবে কোনো চাপের কারণে বন্ধ করা হয়েছে কিনা এ প্রশ্নে এখন কোনো উত্তর দিতে চান না বলে জানান।
এর আগে বুধবার রাতে তিনি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটস দেন। এতে তিনি লেখেন, আজকে Additional SP (উনি বলেন উনার নাম মোস্তাফিজুর রহমান) কোথা থেকে সাহস পায় আমার গায়ে হাত দেয়ার? আমার ভাবি কে মারছে? নারীদের গায়ে নিষ্ঠুরভাবে হাত দেয়? এই চাটুকারদের কি বিচার হবে না? তিনি কালকে ২ মিনিটে জানাজা শেষ করতে বলেন কিভাবে? যেই ছাত্রলীগ মারল তারা কেন সর্বত্র? আমার বাবাকে হুমকি দেয়া হয়েছে আপনার আর এক ছেলে ঢাকা থাকে আপনি কি চান তার ক্ষতি হোক..... গ্রাম-এ বলা হয়েছে কেউ কিছু করলে ১ সপ্তাহ পর গ্রামের সব পুরুষ জেলে থাকবে। বিচার চাই...আমি বিচার চাই..... নয়তো আমাকে মেরে ফেলুন বাবা-মা কষ্ট একবারে পাবে।
প্রসঙ্গত, ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে শনিবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ফাহাদ। এর জেরে রোববার রাতে শেরেবাংলা হলের নিজের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ২০১১ নম্বর কক্ষে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পিটুনির সময় নিহত আবরারকে ‘শিবিরকর্মী’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালায় খুনিরা।
তবে আবরার কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলে নিশ্চিত করেছেন তার পরিবারের সদস্যসহ সংশ্লিষ্টরা। হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ না রাখতে সিসিটিভি ফুটেজ মুছে (ডিলেট) দেয় খুনিরা। তবে পুলিশের আইসিটি বিশেষজ্ঞরা তা উদ্ধারে সক্ষম হন। পুলিশ ও চিকিৎসকরা আবরারকে পিটিয়ে হত্যার প্রমাণ পেয়েছেন।
এ ঘটনায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এ ঘটনায় ১৪ জন জড়িত বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) কৃষ্ণপদ রায়। এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে তার বাবা চকবাজার থানায় সোমবার রাতে একটি হত্যা মামলা করেন। বুয়েট কর্তৃপক্ষ একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে। পাশাপাশি গঠন করেছে একটি তদন্ত কমিটিও।
এদিকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় বুয়েট শাখার সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১১ জনকে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

ইনিউজ৭১/জিয়া