সেমিফাইনালের দৌড়ে একধাপ এগিয়ে নিউজিল্যান্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ৯ই নভেম্বর ২০২৩ ০৯:০২ অপরাহ্ন
সেমিফাইনালের দৌড়ে একধাপ এগিয়ে নিউজিল্যান্ড

বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিশ্চিতের পর শ্রীলঙ্কার সামনে চ্যালেঞ্জ ছিল চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে জায়গা করে নেওয়া। তবে শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি। লঙ্কানদের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি স্বপ্ন ভেঙে দিয়ে চলতি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের দৌড়ে একধাপ এগিয়ে গেছে নিউজিল্যান্ড।


বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) বেঙ্গালুরুর এম. চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৪৬ দশমিক ৪ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৭২ রানের লক্ষ্য দাঁড় করায় লঙ্কানরা। জবাবে অল্প পুঁজির লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দাপুটে শুরু করে কিউইরা। শেষ পর্যন্ত ১৬০ বল হাতে রেখেই ৫ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে বর্তমান ওয়ানডে রানার্স-আপরা।


লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে লঙ্কানদের ১৭১ রানের পুঁজি এক ফুঁ দিয়েই উড়িয়ে দিতে চেয়েছিল কিউইরা। ব্যাটিংয়ে নেমে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দুই কিউই ব্যাটার রাচিন রবীন্দ্র এবং ডেভন কনওয়ে। মারমুখী ব্যাটিংয়ে দ্রুতগতিতে রান তুলতে থাকেন তারা।


আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ব্যক্তিগত অর্ধশতকের খুব কাছে চলে গিয়েছিলেন রাচিন এবং কনওয়ে। তবে দলীয় ৮৬ রানে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। ব্যক্তিগত ৪৫ রানে সাজঘরে ফেরেন কনওয়ে। ফিফটির আগেই থেমেছেন রাচিনও। দলীয় ৯৩ রানের মাথায় ৩৪ বলে ৪২ রানে ফেরেন এ অলরাউন্ডার।


হুট করে জোড়া উইকেট হারালেও রানের চাকা থেমে যায়নি কিউইদের। লঙ্কান বোলারদের চেপে বসতে দেননি চারে নামা ড্যারিল মিচেল। আর দারুণ এক কার্যকরী কার্যকরী ব্যাটিংয়ে জয়ের একদম দ্বারপ্রান্তেই ছিলেন এই ব্যাটার।


তবে জয়ের স্বাদ নেওয়ার কয়েক মিনিট আগে প্যাভিলিয়নে ফেরেন এ ব্যাটার। ৩১ বলে ৪৩ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে আউট হন তিনি। শেষ দিকে ফিলিপসের ১০ বলে ১৭ রানে ১৬০ বল হাতে রেখেই ৫ উইকেটের জয় পায় নিউজিল্যান্ড।


শ্রীলঙ্কার হয়ে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস দুটি এবং মাহিশ থিকশানা এবং দুশমন্থ চামিরা একটি করে উইকেট নেন


এই জয়ে টেবিলের চারে নিউজিল্যান্ড। পাকিস্তান অথবা আফগানরা বিশাল ব্যবধানে না জিতলে কিউইরাই সেমিতে যাচ্ছে।


এর আগে, ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে শ্রীলঙ্কা। ৮ বলে ব্যক্তিগত ২ রানে সাউদির বলে উইকেটের পেছনে লাথামের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন পাথুম নিশাঙ্কা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে দলীয় ৩ রানে নিশাঙ্কা ফেরার পর ৭ বলে ৬ রানে বিদায় নেন কুশল মেন্ডিসও।


লঙ্কান অধিনায়কের বিদায়ের পর ক্রিজে নেমে কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই সাজঘরে ফেরেন সাদিরা সামারাবিক্রমা। ট্রেন্ট বোল্ডের বলে মিচেলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ১ রানে এই টপ-অর্ডার ব্যাটার ফিরলে বেশ চাপে পড়ে লঙ্কানরা।


এক বাউন্ডারিতে ম্যাচে ফেরার বার্তা দিলেও সামারাবিক্রমার পথই অনুসরণ করেন চারিথ আসালঙ্কা। ৮ বলে ৮ রানে বোল্ডের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন এ ব্যাটার। ৭০ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা লঙ্কানরা পরের ৭ বলে স্কোরবোর্ডে কোনো রান যোগ করার আগেই আবারও ধাক্কা খায়।


তবে একপ্রান্তে সতীর্থদের আশা-যাওয়ার মিছিলে অন্যপ্রান্তে দাঁড়িয়ে চলতি আসরে দ্রুততম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন কুশল পেরেরা। ৯ বাউন্ডারি ও দুই ওভার বাউন্ডারিতে দ্রুততম ফিফটির এ মাইলফলকে পৌঁছান ২২ বছর বয়সী এ ওপেনার। তবে এরপর খুব বেশি সময় ক্রিজে থিতু হওয়া হয়নি তার।


ব্যক্তিগত ৫১ রানের মাথায় থেমেছে পেরেরার ঝোড়ো গতির ব্যাটিং। ২২ বলে অর্ধশতকের পর পরের ৭ বলে ব্যক্তিগত স্কোরশিটে ১ রান যোগ করতেই লকি ফার্গুসনের বলে মিচেল স্যান্টনারের হাতে ক্যাচ দিয়ে চলতি বিশ্বকাপে নিজের শেষ অধ্যায়টা রচনা করেন এ ওপেনার।


৭০ রানে ৫ উইকেট হারানো লঙ্কানরা এবার অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজের থেকে একটু বেশিই বোধহয় প্রত্যাশা করছিল। ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে নিয়ে সেই আশার বাণীতে তিনিও কিছুটা আভাস দিচ্ছিলেন। তবে ৩৪ রানের জুটি গড়ে তিনিও ফিরেছেন প্যাভিলিয়নে। স্যান্টনারের বলে মিচেলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ২৭ বলে ১৬ রান করে তিনি।


এরপর দলীয় ১১৩ রানে ৮ উইকেট হারালেও শেষ দিকে মাহেশ থিকশানার ৩৯* রানে ও দিলশান মাদুশঙ্কার ১৯ রানের সুবাদে ৪৬ দশমিক ৪ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৭১ রানে থেমেছে লঙ্কানরা।


কিউইদের হয়ে ট্রেন্ট বোল্ট তিনটি, লকি ফার্গুসন, রাচিন রবীন্দ্র ও মিচেল স্যান্টনার দুটি করে এবং টিম সাউদি একটি করে উইকেট নিয়েছেন।