হেড কোচ হওয়ার সব যোগ্যতাই আমার আছে: সুজন

নিজস্ব প্রতিবেদক
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার ২০শে জুলাই ২০১৯ ০৫:৪৪ অপরাহ্ন
হেড কোচ হওয়ার সব যোগ্যতাই আমার আছে: সুজন

স্টিভ রোডস চলে যাওয়ার পরে খালি আছে বাংলাদেশ দলের হেড কোচ পদ। এই পদের জন্য আবেদন চেয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। কোচ হিসেবে যাকে তাকে নিবেও না বিসিবি। ভালো প্রোফাইল সম্পন্ন একজনকেই চায় সাকিব, তামিমদের কোচ হিসেবে। যেহেতু কোচ পাওয়াটা সময় সাপেক্ষ তাই অন্তর্বর্তী কোচ হচ্ছেন সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন এমনটাই জানা যায় বিসিবির বরাত থেকে। কিন্তু সুজনের গলায় সুর ছিলো অন্যরকম। সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য না, তিনি লম্বা সময়ের জন্য কোচ হতে চান টাইগারদের। আপাতত খালেদ মাহমুদের কোচিংয়েই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ।

দ্বিতীয়বারের মতো অস্থায়ী ভিত্তিতে বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব পেয়েছেন খালেদ মাহমুদ। মাহমুদের ক্রিকেটজ্ঞান নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। দীর্ঘদিন জাতীয় দলে খেলে অবসর নিয়ে কোচিং ক্যারিয়ারের সঙ্গেও আছেন প্রায় এক যুগের বেশি সময়। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আবাহনী ও বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ঢাকা ডায়নামাইটসের কোচ হিসেবে সাফল্য আছে তাঁর। কিন্তু জাতীয় দলের কোচ হওয়ার জন্য তিনি যোগ্য কি না, সে প্রশ্ন থেকেই যায়। আজ আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন উঠেছিল, জাতীয় দলের কোচ হওয়ার জন্য নিজেকে যোগ্য মনে করার কারণ কী?

নিজের কোচিং–ক্যারিয়ারবৃত্তান্ত সামনে তুলে এনে নিজের যোগ্যতা তুলে ধরেছেন সুজন। এ ছাড়া জাতীয় দলের কোচ হওয়াটা এমন কোনো কঠিন ব্যাপার নয় বলে মনে করেন মাহমুদ, ‘আমি নিজেকে যোগ্য মনে করি। আমি কতটুকু যোগ্য জানি না। তবে আমি মনে করি, এটা কোনো রকেট সায়েন্স নয়। অন্য কোচরা বলেন, আমরা লেভেল থ্রি-ফোর করেছি। আমিও ২০০৬-০৭ সালে তা করেছি। আর করে বসে ছিলাম, তাও নয়। মাঠে কাজ করেছি। ক্রিকেটের কৌশলগুলো তো সবারই একরকম। স্কয়ার কাট সবাই একভাবেই মারে বা ইনসুইং-আউট সুইং একই রকম থাকে। এটা নির্ধারিত বিষয়।’

অনেক দিন জাতীয় দলের ম্যানেজার ও ঘরোয়া ক্রিকেটে কোচিং করানোর সুবিধার্থে বিদেশি যেকোনো কোচের চেয়ে নিজেকে এগিয়ে রাখছেন, ‘আমি মনে করি, যেহেতু আমি এ দেশে বড় হয়েছি, এই খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলেছি, মাঠে আমার জন্য পরিকল্পনা সাজানো অনেক সহজ হবে। আমি একেকজনের মানসিকতা খুব তাড়াতাড়ি বুঝতে পারি। ক্রিকেট অনেকটা মানসিক খেলা। ১১টা মানুষকে মাঠে এক করা, টিম স্পিরিট তৈরি করে ম্যাচ জেতানোর ব্যাপার থাকে। সেটা আমার জন্য সহজ হয়। একটা নতুন কোচ আসলে যেটা হয় একটা টিমকে চেনা, নতুন খেলোয়াড়কে চেনা-বোঝা—এটা করতে করতে অনেক সময় চলে যায়। সেটা আমার লাগবে না। জুনিয়র যেসব খেলোয়াড় আছেন, তাদের সবার সঙ্গেই আমি কাজ করে অভ্যস্ত। জাতীয় দলের বাইরেও যদি যায়, এটা আমার জন্য বাড়তি সুবিধা।’

খেলোয়াড়ি জীবন থেকে অবসর নেওয়ার পর ক্রিকেট নিয়েই আছেন মাহমুদ। ঘরোয়া ক্রিকেটের শীর্ষ পর্যায়ে তাঁর সাফল্যও অনেক, ‘ক্যারিয়ার ১৪-১৫ বছর হয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন বড় দলের সঙ্গে কাজ করেছি। প্রিমিয়ার লিগটা যদি ওভাবে না ধরি বিপিএল ৫ বছর ধরে প্রধান কোচ হিসেবে কাজ করছি। চিটাগংয়ে ছিলাম। পরে ঢাকা ডায়নামাইটসে কাজ করছি। সুতরাং আমার তো অভিজ্ঞতা আছে কোচিংয়ের। আর আমি তো বললাম, এটা কোনো রকেট সায়েন্স নয়। আমার ক্রিকেটে হাতেখড়ি ১৩ বছর বয়স থেকে। ক্রিকেটের সঙ্গেই আছি, নানা ধরনের কোচের সঙ্গে কাজ করেছি। কারা কী করতে চায়, কীভাবে টিম হ্যান্ডেল করে—সবকিছু মিলিয়ে ক্রিকেটের ব্যাপারে আমি কতটুকু ইচ্ছুক। সবকিছু মিলিয়ে ক্রিকেটের ব্যাপারে আমি খুবই আগ্রহী।’

নিজেকে প্রধান কোচ হিসেবে যোগ্য মনে করলেও কোচের জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড যে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে, সেখানে আবেদন করেননি মাহমুদ। বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের যেই অভিজ্ঞতা তা কারো জন্যই সুখকর নয়। প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন টিমের বিরুদ্ধে থাকে নানা অভিযোগ। মাঠে আম্পায়ারদের সাথে টিম অফিশিয়ালদের আচরণ অনেক সময় হয়ে যায় বর্ণনার অতীত। এইসব টুর্নামেন্টে দল জেতানো কি জাতীয় দলের কোচ হওয়ার যোগ্যতা হতে পারে? প্রশ্ন রইলো সুজনের কাছে।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব