ইউপি চেয়ারম্যানের ফাঁদে চার শতাধিক মানুষ, বাদ পড়েননি এমপিও

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার ২৩শে সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:০১ অপরাহ্ন
ইউপি চেয়ারম্যানের ফাঁদে চার শতাধিক মানুষ, বাদ পড়েননি এমপিও

রেন্ট-এ-কারের নামে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে কুমিল্লায় মেঘনা উপজেলার মনিকার চর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকির হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।


শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে গাড়ি বিক্রি আর ভাড়ার নামে প্রতারণা ছিল জাকির হোসেনের মূল কাজ। আমেরিকা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টারত জাকিরকে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ।


জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে সম্প্রতি রাজধানীর ডিবি কার্যালয়ে ভিড় করেন শত শত মানুষ।


তাদের দাবি, জাকির হোসেনের কাছ থেকে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকায় মাইক্রোবাস কেনেন তারা। পরে সেই গাড়ি মাসিক ৭০ হাজার টাকায় ভাড়া নিয়ে প্রতারণা শুরু করেন জাকির।


ভুক্তভোগী একজন বলেন, ‘গাড়িটা তার কাছ থেকে নিলাম; এরপর শুধু এক মাসের ভাড়া পাইছি। আর কোনো টাকা দেয়নি। প্রশাসনের লোকজন যেহেতু ওর কাছ থেকে গাড়ি নিয়েছে, প্রশাসন তো আমাদের অভিভাবক–এটা ভেবেই আমরা তার কাছে ভাড়া দেই। কয়েক মাস ভাড়া দিয়েছিল। পরে ভাড়া আটকে দেয়, গাড়িও আটকে দেয়।’


এ ছাড়া জাকিরের বিরুদ্ধে এক গাড়ি কয়েকবার বিক্রি, ভুয়া রেজিস্ট্রেশনসহ নানা রকম প্রতারণার অভিযোগ লিখিতভাবে জানান ভুক্তভোগীরা। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) জাকিরকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ।


সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, প্রায় ৩০০ লোকের কাছ থেকে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন জাকির।


ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘মানুষ মনে করে যে ১৫-২০ লাখ টাকা দিয়ে একটা গাড়ি কিনলে মাসে যদি ৭০ হাজার টাকা দেয়, তাহলে তিনি গাড়িটা ভাড়ায় চালান। পরে ভুয়া রেজিস্ট্রেশন করে ভুয়া কাগজ ধরিয়ে দেয় ভুক্তভোগীদের; আর তারা মনে করে, আমার কাছে তো কাগজ আছেই।’


পুলিশ বলছে, এসব কাজে বিশ্বাস বাড়াতে তিনি প্রভাবশালীদের সঙ্গেও গড়ে তোলেন ব্যবসায়িক সখ্য।


হারুন অর রশীদ আরও বলেন, ‘জাকির কয়েকজন এমপির কাছ থেকেও টাকা নিয়েছেন, প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছ থেকেও টাকা নিয়েছেন। এদের টাকাটা আবার সে মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করেছে ঠিকভাবে। এর আড়ালে আরও তিন-চারশ কাস্টমার রয়েছেন, তারা কেউই টাকা পাননি।’


জাকিরের সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।