মেহেরপুরে ১৩০০ নকল কার্ডে টিসিবির পণ্য হাতানোর চেষ্টা!

নিজস্ব প্রতিবেদক
এস এম তারেক হোসেন, জেলা প্রতিনিধি মেহেরপুর
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ৩০শে মার্চ ২০২৩ ০৫:৫৪ অপরাহ্ন
মেহেরপুরে ১৩০০ নকল কার্ডে টিসিবির পণ্য হাতানোর চেষ্টা!

করোনাকালীন প্রণোদনা পেয়েছিলেন এমন মানুষদের দেওয়া হয় টিসিবির পণ্য নেওয়ার কার্ড। মেহেরপুরে এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে একটি চক্র প্রায় সমপরিমান কার্ড নকল করে টিসিবির পণ্য হাতানোর চেষ্টা করে। সদর উপজেলার বারাদি ইউনিয়নে টিসিবির ১ হাজার ৩০০ কার্ড নকল করা হয়েছে। ফলে পণ্য আনতে গিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১ হাজার ৩০০ জনকে টিসিবি কার্ড দেওয়া হয়। পরে নতুন করে আরো ২০৩টি কার্ডের বাড়তি বরাদ্দ দেওয়া হয়। ঐ সময়ে নবগঠিত বারাদি ইউনিয়নের প্রশাসকের দায়িত্বে ছিলেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আপিল উদ্দিন। তাঁর স্বাক্ষরে কার্ডগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁর স্বাক্ষরযুক্ত সিলমোহর জাল করে প্রায় দ্বিগুণ কার্ড তৈরি করেছে একটি চক্র। কিছু কার্ডে সিল নেই। যাঁরা কার্ডগুলো নিয়ে পণ্য নিতে আসছেন তাঁরা মালিকও নন।

গত মঙ্গলবার সরেজমিনে বারাদি ইউনিয়নে দেখা যায়, প্রায় শতাধিক নারী-পুরুষ কার্ড হাতে লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। চেয়ারম্যানের একজন প্রতিনিধি কার্ডগুলো নিয়ে নিচ্ছেন।

কথা হয় চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি রুহুল আমিনের সঙ্গে। তিনি কার্ড নেওয়ার কথা স্বীকার করে কার্ড সংরক্ষণ করা বাক্সটি খুলে দেখান। তিনি জানান, পাশের আমঝুপি, পিরোজপুর ইউনিয়ন ও চুয়াডাঙ্গার কুলপালা গ্রামের বাসিন্দারা পণ্য নিতে এসেছেন। আবার অনেক কার্ডে কোনো সিল-স্বাক্ষর নেই। ফলে নির্দিষ্ট পণ্য শেষ হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু মানুষের ভিড় কমছে না। এর আগে যাঁরা পণ্য দিতেন তাঁরা এসব কার্ডেই পণ্য দিয়েছেন।

বারাদি ইউনিয়নের টিসিবি ডিলার নাজবুল হোসেন বলেন, এই ইউনিয়নের পণ্য দিতে এসে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। নির্দিষ্ট পরিমাণের থেকেও অনেক বেশি মানুষ পণ্য নিতে আসেন। বিষয়টি নিয়ে চেয়ারম্যানকে জানালে তাঁরা এবার কার্ডগুলো যাচাই করছেন।

ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর সদস্য জাকির হোসেন লিটন বলেন, ‘১ হাজার ৩০০ কার্ড নকল করে ২ হাজার ৬০০ বানানো হয়েছে। ফলে দ্বিগুণ লোক আসছেন পণ্য নিতে।  দেখা যাচ্ছে, আসল কার্ডধারীরা পণ্য না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।’

বারাদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম জানান, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আপিল উদ্দিনের স্বাক্ষরযুক্ত সিলমোহর তৈরি করে হয়তো অনেকে জাল কার্ড তৈরি করেছেন।