ছাত্রীকে যৌন হয়রানি: একাডেমিক কার্যক্রমে অব্যহতি ও তদন্ত কমিটি গঠন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: বুধবার ২৬শে জুন ২০১৯ ০৮:০৬ অপরাহ্ন
ছাত্রীকে যৌন হয়রানি: একাডেমিক কার্যক্রমে অব্যহতি ও তদন্ত কমিটি গঠন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীর যৌন হয়রানীর অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়াও গত মঙ্গলবার আইইআরে অনুষ্ঠিত এক জরুরী সভায় অভিযুক্ত সহকারী অধ্যাপক বিষ্ণুকুমার অধিকারীকে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে বুধবার বিকেলে আইইআরের পরিচালক অধ্যাপক আবুল হাসান চৌধুরী নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরও জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত শিক্ষক বিষ্ণুকুমার অধিকারীকে ২য় ও ৪র্থ বর্ষের ক্লাস-পরীক্ষা, ফলাফলসহ সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে। আইইআরের পরিচালককে প্রধান করে গঠিত তদন্ত কমিটি অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখবে। এরপর কমিটির রিপোর্ট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবহিত করা হবে।

গত মঙ্গলবার ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইইআরের পরিচালক বরাবর এক ছাত্রী যৌন হয়রানী ও মানসিকভাবে উত্যক্তের লিখিত অভিযোগ দেন। ভুক্তভোগী ছাত্রীর অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, ‘আমি আমার বিভাগের শিক্ষক বিষ্ণুকুমার অধিকারীর দ্বারা বিভিন্ন ভাবে যৌন হয়রানী ও মানুষিকভাবে উত্তক্তের শিকার হই। যার কারণে আমি মানসিকভাবে অনেক বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি। আমি পড়াশুনা এবং অন্য কোনো কাজেই মনযোগ দিতে পারছি না, মেন্টাল ট্রমায় ভুগছি।’
ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘কারণে অকারণে তার অফিসে ডাকে বসিয়ে রাখেন, ফ্রি মাইন্ডের কথা বলে নানা রকম ইঙ্গিতপূর্ণ ও অশালীন কথাবার্তা বলেন, অন্য নারী শিক্ষকদের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন, শিক্ষক হওয়ার ক্ষমতা দেখাতেন। তিনি আমাকে প্রায়ই রাত ১১টার পর ফোন করে কথা বলেন।’

ওই শিক্ষার্থীর সামনে অভিযুক্ত শিক্ষক বিষ্ণুকুমার অধিকারী তার এক নারী সহকর্মীর নামে শারীরিক সম্পর্কের বিষয়ে অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের কথা উল্লেখ করেন অভিযোগ পত্রে। অভিযুক্ত শিক্ষক ইনস্টিটিউটের একাধিক ছাত্রীর সামনে মেয়েদের শরীরসম্বন্ধীয় ব্যাপারে ইঙ্গিত করে নানা অশালীন কথাবার্তা বলা ও কোর্সের নম্বরের কথা বারবার উল্লেখ করে শিক্ষকের ক্ষমতা দেখাতেন বলে অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

এর আগেও বিষ্ণুকুমার অধিকারীর বিরুদ্ধে ইনস্টিটিউটের সান্ধ্যকোর্সের একাধিক ছাত্রী হয়রানীর অভিযোগ তুলে তাকে কোর্স থেকে অব্যহতির অনুরোধ জানান পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান বরাবর। একারণে তাকে ওই ব্যাচের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে সরিয়ে নেয়া হয়। ভুক্তভোগী সেই শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি আর মানসিকভাবে সহ্য করতে না পেরে অভিযোগ করেছি। আমি চাইনা ওই শিক্ষক আমার মতো আর কারো সঙ্গে এমন করুক। আমি নায্য বিচার চাই।’ তিনি জানান, রেজিস্ট্রার করে ডাকযোগে অভিযোগপত্রের কপি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, জনসংযোগ প্রশাসক, প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর পাঠানো হয়েছে।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব