করোনায় বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান টিউশন ফি আদায়ে চাপ দিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা
সাধারণ ছুটিতে বন্ধ থাকা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি নিতে বারণ করা হয়েছে। এরপরও কিছু প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের কাছে বিকাশ নম্বর পাঠিয়ে টিউশন ফি পরিশোধের জন্য বলছে। আর এই বিষয়ে কড়া বার্তা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড, ঢাকা। একইসঙ্গে বোর্ড বলছে, বন্ধ প্রতিষ্ঠানগুলো টিউশন ফি আদায়ে চাপ দিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
করোনার সময় বন্ধ থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে টিউশন ফি না নিতে অনুরোধ করে আসছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এই বিষয়ে ‘অভিভাবক ঐক্য ফোরাম’-এর সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু বলেন, ‘বন্ধের সময় শিক্ষার্থীর টিউশন ফি মওকুফ করতে হবে।’
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় আপৎকালীন ব্যয়ভার বহন প্রসঙ্গ জিয়াউল কবির দুলু বলেন, ‘সরকার বিভিন্ন খাতে প্রণোদনা দিচ্ছে। সেই প্রণোদনা বেরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও দিতে হবে। তাহলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অভিভাবকরাও উপকৃত হবে।’
তবে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা টিউশন ফি আদায়ের পক্ষেই। তারা বলছেন, এই মুহূর্তে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। কিন্তু গত দুই মাস শিক্ষকদের বেতন পরিশোধ করা যাচ্ছে না। ফলে প্রতিষ্ঠান সচল রাখতেই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি চাওয়া হচ্ছে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জিএম নিজামুদ্দিন বলেন, ‘বর্তমানে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোতে নতুন সেশন শুরু হতে যাচ্ছে। এ কারণে পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন কার্যক্রমও শুরু করতে হচ্ছে। শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সবার বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে শিক্ষার্থীদের কাছে টিউশন ফি আদায় করছে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলো।’
প্রায় একই দাবি শেলের টেক ইংলিশ ভার্সন স্কুলের অধ্যক্ষ আঞ্জুমান লায়লারও। তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো চলেই মূলত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি দিয়েই। টিউশন ফি ছাড়া প্রতিষ্ঠান চালানো সম্ভব নয়।’
তবে, টিউশন ফি আদায়ে চাপ সৃষ্টির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন নালন্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুমনা হক। তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি, যারা এখন দিতে চান, তারা এখন দেবেন। এখন দিতে না পারলে পরেও দিলেও হবে।’
জানতে চাইলে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান মু. জিয়াউল হক বলেন, ‘এ বিষয়ে চাপ সৃষ্টি না করতে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছি। এরপরও যদি কোনো অভিযোগ আসে, আমরা দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।’
উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ দিয়ে কোনো টিউশন ফি আদায় না করতে গত ২৩ এপ্রিল জরুরি নির্দেশনা জারি করে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।