প্রকাশ: ১ আগস্ট ২০২৫, ২২:২৯
দেশজুড়ে আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগ। প্রতি সপ্তাহেই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। হাসপাতালে রোগীর চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে, যার ফলে জনস্বাস্থ্যের ওপর নতুন করে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি সপ্তাহে (শনি থেকে শুক্রবার) ডেঙ্গুতে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ২ হাজার ৩২৯ জন নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তের এই ঊর্ধ্বগতি পরিস্থিতিকে আবারও উদ্বেগজনক করে তুলেছে।
সাপ্তাহিক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২৬ জুলাই তিনজন মারা গেছেন ও ৩৩১ জন ভর্তি, ২৭ জুলাই তিনজনের মৃত্যু ও ৪০৯ জন ভর্তি, ২৮ জুলাই দুইজনের মৃত্যু ও ৩৯৪ জন ভর্তি, ২৯ জুলাই একজনের মৃত্যু ও ৩৯৩ জন ভর্তি, ৩০ জুলাই দুইজনের মৃত্যু ও ৩৮৬ জন ভর্তি, ৩১ জুলাই দুইজনের মৃত্যু ও ২৭৮ জন ভর্তি এবং ১ আগস্ট মৃত্যু না হলেও ভর্তি হয়েছেন ১৩৮ জন।
চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২১ হাজার ১১৮ জন, যাদের মধ্যে ১৯ হাজার ৭২৮ জন চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৩ জনে।
বিশেষ করে জুলাই মাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা এ বছরের একক মাস হিসেবে সর্বোচ্চ রেকর্ড। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে আগস্টে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু এখন শুধু বর্ষাকালীন নয়, বরং সারা বছরব্যাপী দেখা দিচ্ছে। তিনি বলেন, “বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে এর প্রকোপ বেড়ে যায়, এজন্য ব্যক্তিগত সচেতনতা ও প্রশাসনিক উদ্যোগ একযোগে নেওয়া জরুরি।”
অন্যদিকে কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী বলেন, “মশা নিধনে শুধু জরিমানা বা প্রচারাভিযান নয়, জরিপ ও দক্ষ জনবল দিয়ে টেকসই পদক্ষেপ নিতে হবে।”
উল্লেখযোগ্য যে, ২০২৩ সালে ডেঙ্গুর ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ দেখা যায়, যখন আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন এবং মৃত্যুবরণ করেন ১ হাজার ৭০৫ জন। এ বছরের পরিস্থিতিও ধীরে ধীরে সেই রেকর্ডের কাছাকাছি চলে যাচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন।