রাজধানীর উত্তরায় এক গৃহপরিচারিকাকে জিনিস নষ্টের অপবাদ মারধর করেছেন সাইয়েদা সুলতানা অ্যানী নামের এক নারী আন্দোলন কর্মী। নির্যাতনের শিকার হওয়া ওই তরুণীর নাম পাপিয়া আক্তার মীম। গতকাল বৃহস্পতিবার নিজ ফেসবুক পোস্টে ওই অমানবিক ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন ওই তরুণী। এমনকি ফেসবুক পোস্টের এক ভিডিওতে দেখা যায় এক নারী অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও চড়াও হচ্ছেন ওই গৃহপরিচারিকার ওপর। বার বার অনুরোধ করা সত্বেও অকথ্য ভাষা ব্যবহার ও চড়াও হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যায় ভিডিওটিতে।
নির্যাতনের শিকার হওয়া ওই তরুণী জানান, উত্তরার একটি বাসায় কাজ করতাম। অপর এক গৃহকর্মী কাজ করার সময় ফ্রিজে দাগ ফেলে দেয়। এতে বাসার মালিক (মহিলা) আমার উপর অপবাদ ফেলে এবং আমাকে ব্যাপক, মারধর করলে এক পর্যায়ে আমি প্রাণভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে চাইলে তিনি আমাকে গেট লাগিয়ে মারধর করেন। পরে, অনেক কষ্ট করে কোনওরকম সেখান থেকে বের হয়ে আমি পুলিশের শরণাপন্ন হই।
ফেসবুকে মারধরের কয়েকটি ভিডিও নির্যাতনের ছবি পোস্ট করে লিখেছ্যেন, এই করোনার মহামারিতে মানুষ এমন হিংস্র কিভাবে হতে পারে,সবাইকে আমার এই ভিডিও টা দেখার জন্য অনুরোধ করছি। আজ গরীব হয়ে জন্ম নিয়েছি বলে,বড় লোকদের হাতে মার খেয়ে চুপ থাকতে হচ্ছে, কারণ পুলিশ শুধু বড়লোকদের,আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে ছোট একটা জবে ঢুকেছিলাম,এর মধ্যে করোনার জন্য চাকরি শেষ পর্যন্ত করতে পারি নাই,ভাবলাম বসে থেকে কি হবে,এক পরিচিত ভাই ভাইয়ের মাধ্যমে এক বড়লোকের বাড়িতে একটা প্রতিবন্ধী মেয়ে দেখাশোনা করার জন্য কাল যাই, সমান্য একটা ভুলের কারণে, যেই ভুলটা আমি করি নাই, ফ্রিজ পরিস্কার করা নিয়ে একটু দাগ হওয়ার কারনে, কাল থেকে আজ সকাল পর্যন্ত আমাকে আটকে রেখে এমন নির্যাতন করে, আমি বার বার বলছি ম্যাম আমাকে যেতে দেন,উনি পরে আমার একটা ভিডিও ধারণ করে,যেখানে আমাকে জোরপূর্বক বলতে বলে যে আমি উনার বাসা থেকে ইচ্ছাকৃত চলে যাচ্ছি, আমি মারের ভয়ে বলতে বাধ্য হয়েছি।
তিনি বলেন, আমি থানায় যাই কিন্তু কোনও কাজ হয়নি,পুলিশ আমার সাথে আসছে ঠিক কিন্তু, উনার সাথে ফোন কথা বলে,আমাকে বলছে আপনি বাসায় যান, আমরা দেখছি বেপারটা,যানি আমি এটার আর কিছু হবে না,তাই আপনাদের সাথে কথাটা শেয়ার করলাম,মানুষ কোন সময় এমন সিদ্ধান্ত নেয় কারো বাসায় কাজ করার সেটা পরিস্থিতি মানুষকে অসহায় করে ফেলে, যখন মা বাবা মুখের দিকে তাকাই তখন আর কোন কিছু মাথাই আসে না।
মীম শুক্রবার দুপুরে ফেসবুক লাইভে এসেও বলেন, তাকে চুলের মুঠি ধরে নির্যাতন করা হয়েছে। পা ধরে মাফ চাইলেও মাফ করা হয় নি আমাকে। এ বিষয়ে অবশ্য অযুক্ত অ্যানী বলেছেন, কাজ করার দ্বিতীয় দিনেই মীম ১০ হাজার টাকা দাবি করে বসে। এছাড়াও মীমকে তিনি নির্যাতনও করেননি।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।