ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার মেঘনা নদীর সাথে সংযুক্ত প্রবাহমান বেতুয়ার খালে বাঁধ দিয়ে বেকু মেশিনে মাটি কেটে স্থানীয় জসিম হাওলাদারের এসএন ব্রিকফিল্ডে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সামনের দিকে আরো মাটি কাটার জন্য খালের দুই পাড়ের বাসিন্দাদের দোকান ও থাকার ঘর সড়িয়ে না নিলে বেকুর ম্যানেজার কামাল তা ভেঙ্গে ফেরার হুমকি দিয়েছেন বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন।
উপজেলার হাকিমুদ্দিন বাজার এলাকা থেকে শুরু হওয়া হাসাননগনর ও টবগী ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ওই খালের দুই স্থানে আড়াআড়িভাবে সু-উচ্চ বাঁধ দিয়ে ৩০০-৩৫০ মিটার খালের মাটি কেটে নেয়া হয়েছে। এছাড়া বিরামহীনভাবে দুইটি বেকু মেশিনে খালের ঢাল না রেখে ২৫-৩০ ফুট গভীর পর্যন্ত মাটি কাটতে দেখা যায়। এতে দুই পাড়ের বাসিন্দাদের ঘর সহ সড়ক ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে পড়েছে।
হাসাননগর ইউনিয়নের চার নাম্বার ওয়ার্ডের খালপাড়ের বাসিন্দা মিজান জানান, মঙ্গলবারের মধ্যে তাঁর দোকান সড়িয়ে না নিলে তা ভেঙ্গে ফেলবে বলে কামাল হুমকি দিয়েছে। এছাড়া ওই স্থানের বাসিন্দা রফিজল ইসলাম, শাহে আলম, মো. ইব্রাহিম মো. ফারুক জানান, খালে ওই বাঁধ দেয়ার ফলে প্রায় ৩ শত পরিবার বর্ষায় পানিবন্দি হয়ে পড়বেন। এছাড়া ফসলও করতে পারবেন না। অন্যদিকে খালপাড়ের হাকিমুদ্দিন-খাশমহল বাজার সংযোগ সড়কটি ঢাল না রাখায় ভেঙ্গে পড়ার ঝুঁকিতে আছে। খাল পাড়ের টবগী ইউনিয়নের চার নাম্বার ওয়ার্ডের বাসিন্দা পিয়ারা বেগম, কুলসুম বেগম, মোজাম্মেল হক ও জামাল জানান, খাল কাটায় তাঁদের ঘরে ফাঁটল দেখা দিয়েছে। কিছু বললেই বেকুওয়ালারা ঘর ভেঙ্গে ফেলার হুমকি-ধামকি দেয়। তাঁরা ঝড়-বৃষ্টিতে মাটি ধসে ঘর ভেঙ্গে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
এছাড়া মেঘনা পাড়ের জেলেরা জানান, আগে ঝড়-বৃষ্টিতে ওই খালে তাঁরা আশ্রয় নিতেন। বাঁধ দেয়ার ফলে আশ্রয় নেয়ার আর জায়গা রইলো না। বেকুর ম্যানেজার কামাল হুমকি দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে কিসের ভিত্তিতে খালের মাটি কাটা হচ্ছে এ প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি জানিনা, মালিক জানেন।
ব্রিক ফিল্ডের মালিক মালিক জসিমউদ্দিন হাওলাদার জানান, তিনি ওই খালের ডিসিআর সূত্রে মালিক হানিফ মাষ্টার সহ কয়েকজনের সাথে চুত্তিভিত্তিক রাস্তা সংস্কারের জন্য মাটি কাটছেন। খালে দুই পাড়ের বাঁধও তাঁদের নির্দেশে করা হয়েছে। কাজের পর অবশিষ্ট মাটি তিনি নিচ্ছেন।
এ ব্যাপারে হাসাননগর ইউপি চেয়ারম্যান মানিক হাওলাদার বলেন, খাল কেটে মাটি উত্তোলনে নিষেধ করা সত্তে¡ও তাঁরা শোনেনি। যে সড়ক মেরামতের কথা বলা হচ্ছে সে ব্যাপারেও ইউনিয়ন পরিষদকে কিছু জানানো হয়নি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী(এসডিই)আশিকুর রহমান বলেন, প্রবাহমান খালে বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করা বে-আইনি। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের সাথে আলাপ করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বলেন, আব্দুল মালেক জানান, জলাধার আইনে খালে বাঁধ দেয়া যায়না। কি কারণে খাল কাটা হচ্ছে তা স্থানীয় প্রশাসন ভালো বলতে পারবেন।
ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও)মো. বশির গাজী জানান,ওই খাল দখলমুক্ত রাখতে মাছ চাষের জন্য জসিমউদ্দিন(ব্রিক ফিল্ডের মালিক) ও ফিরোজ মেম্বারকে ১ বছরের জন্য খাস কালেকশনের জন্য দেয়া হয়েছে। হানিফ মাষ্টারকে দেয়া হয়নি। ওই বিষয়ে কোন অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।