আবাসিকে গ্যাস সংযোগের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক
সৌরভ নূর , বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: বুধবার ১লা জুলাই ২০২০ ০৮:০৩ অপরাহ্ন
আবাসিকে গ্যাস সংযোগের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার

বাংলাদেশের ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগের অপার সম্ভাবনা ছিল বেশ কিছু বছরে আগে ও । কিন্তু নানা অপচয় আর জটিলতার জন্য সরকার আবাসিক ক্ষেত্রে গ্যাস সংযোগ দেওয়া একবারে বন্ধ করে দিয়েছিলেন । তবে দীর্ঘদিন পর পাইপলাইনের মাধ্যমে আবাসিকে (বাসা-বাড়ি) গ্যাস সংযোগের দুয়ার খুলছে এবার । ইতোমধ্যে মৌখিকভাবে এ বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এখন সামগ্রিক বিষয় বিশ্লেষণ করে এ বিষয়ে একটি কর্মপদ্ধতি নির্ধারণের প্রক্রিয়া চলছে।

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে  জানা গেছে , চলতি বছরের মধ্যেই গ্যাস সংযোগ দেয়া শুরু করার চিন্তা-ভাবনা করছে সরকার । ২০০৯ সালের ২১ জুলাই থেকে শিল্প ও বাণিজ্যিকে নতুন গ্যাস সংযোগ বন্ধ করা হয়। এরপর ২০১০ সালের ১৩ জুলাই থেকে আবাসিকেও নতুন গ্যাস-সংযোগ বন্ধ করা হয়। ২০১৩ সালের ৭ মে আবাসিকে সংযোগ দেয়া শুরু হলেও কিছুদিন পর তা আবার বন্ধ করে দেয়া হয়। এর পর এখন পর্যন্ত বন্ধ আছে আবাসিকে। 

বাংলাদেশে ছয়টি সরকারি কোম্পানি গ্যাস বিতরণ করে। এগুলো হলো- তিতাস, জালালাবাদ, বাখরাবাদ, কর্ণফুলী, পশ্চিমাঞ্চল, ও সুন্দরবন। সারাদেশে বৈধ আবাসিক গ্রাহক ৩৮ লাখ। তাদের মধ্যে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, নরসিংদী, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জে মোট ২৭ লাখ গ্রাহকের কাছে গ্যাস সরবরাহ করছে তিতাস গ্যাস।

আবাসিকে বা বাসা বাড়িতে গ্যাস সংযোগ চালুর বিষয়ে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আনিছুর রহমান বুধবার ইনিউজকে বলেন, ‘আমরা দেখছি , বিচার-বিশ্লেষণ চলছে- কী আছে, কী লাগবে, কী দিতে হবে, কী পরিমাণ আবেদন পেন্ডিং আছে সব বিষয় আমরা দেখছি । এগুলো নিয়ে আমরা এক্সারসাইজ করছি। এরপর আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দিকে যাব।’ তবে ভালো কিছু দেওয়াটাই আমাদের লক্ষ ।

তিনি আরও বলেন, অনেকে বেশ কয়েক বছর আগে ডিমান্ড নোট জমা দিয়েছিল, এমন একটা ক্যাটাগরি আছে। কিছু আছে ডিমান্ড ইস্যু করা হয়েছিল কিন্তু টাকা জমা হয়নি, কিছু অ্যাপ্লিকেশন ছিল, কিছু আছে অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করে যাচ্ছে। এসব সব বিষয় নিয়ে আমরা বিশ্লেষণ করছি । ‘ আর এই চার ক্যাটাগরিতে কীসংখ্যক আছে, হয়তো ১০ শতাংশ কম-বেশি হবে। এর সঙ্গে আমাদের পজিশন কী, এই চার ক্যাটাগরিতে সংযোগের ক্ষেত্রে কী পরিমাণ গ্যাস লাগবে, কতজনকে আমরা সংযোগ দিতে পারব, কী পরিমাণ গ্যাসের সংস্থান আমাদের আছে। এগুলো বিবেচনা করে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

এ বিষয় নিয়ে সিনিয়র সচিব আনিছুর রহমান বলেন, ‘এগুলো নিয়ে হাইকোর্টে মামলা মোকদ্দমাও হয়েছিল, এ বিষয়ে অর্ডারও আছে। সবকিছু নিয়ে যাচাই-বাছাই করে তারপর এগোব কীভাবে কী করা যায়। তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। প্রাথমিকভাবে আমরা তার সঙ্গে আলোচনা করেছি, সবকিছু বিস্তারিতভাবে এক্সারসাইজ করে প্রস্তাব পাঠিয়ে প্রধানমন্ত্রীর চূড়ান্ত অনুমোদন আনতে হবে।’ আমরা তার চেষ্টা করে যাচ্ছি । 

তিনি আরও বলেন যে , আমরা আশা করছি আগামী কিছুদিনের মধ্যেই একটা পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারব। দ্রুত কিছু করার চেষ্টা করব, যাতে কয়েক মাসের মধ্যেই শুরু করা যায়।’ তিনি এ ও বলেন যে  ‘আমরা একটা কর্মপদ্ধতি ঠিক করব কীভাবে এটা করব। একসঙ্গে সবাইকে দিতে (গ্যাস সংযোগ) পারব না, ধীরে ধীরে দেয়া হবে।’