টেকনাফে অস্ত্রের মুখে ৪ জেলেকে অপহরণ করলো আরাকান আর্মি

নিজস্ব প্রতিবেদক
আমান উল্লাহ কবির,নিজস্ব প্রতিনিধি টেকনাফ (কক্সবাজার)
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১১ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৩:৪০ অপরাহ্ন
টেকনাফে অস্ত্রের মুখে ৪ জেলেকে অপহরণ করলো আরাকান আর্মি

কক্সবাজারের টেকনাফে নাফ নদী মোহনায় মাছ ধরতে যাওয়া ৪ জেলেকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী, আরাকান আর্মি। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় শাহপরীর দ্বীপের গোলারচর মুখ এলাকা থেকে এই ঘটনা ঘটে। অপহৃতদের মধ্যে আছেন টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা মো. হাছান (৩০), আবদু রকিম (২০), মো. জাবের (২৬) এবং মো. হাছান (১৬)। 


শাহপরীর দ্বীপের দক্ষিণ নৌঘাটের সভাপতি বশির আহমেদ এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “প্রতিদিনের মতো মাছ ধরতে নাফ নদে গিয়েছিলেন তারা, কিন্তু তখনই মিয়ানমারের আরাকান আর্মি তাদের ট্রলারসহ অপহরণ করে নিয়ে যায়।” বশির আহমেদ আরও জানান, ঘটনাটি বিজিবি এবং স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে এবং জেলেপল্লিতে আতঙ্ক বিরাজ করছে। 


টেকনাফ বিজিবির এক শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “বাংলাদেশ সীমান্ত অতিক্রম করে মিয়ানমারের আরাকান আর্মি ৪ জেলেকে ট্রলারসহ নিয়ে গেছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি এবং তাদের দ্রুত ফেরত আনার চেষ্টা করছি।” 


টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন জানান, “জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের ফেরত আনতে কাজ করছে।” তিনি আরও বলেন, এ ধরনের ঘটনায় সীমান্তের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আরও সতর্কতা অবলম্বন করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। 


এটি প্রথমবার নয়, এর আগে ২০২৪ সালের ৬ অক্টোবর টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাট থেকে ৫৮ জন জেলে গভীর সাগরে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। তাদের ৯ অক্টোবর মিয়ানমারের নৌবাহিনী অপহরণ করে। সেই সময় মিয়ানমারের নৌবাহিনী একটি বাংলাদেশি ট্রলার লক্ষ্য করে গুলি চালায়, এতে তিন জেলে গুলিবিদ্ধ হন এবং একজন ঘটনাস্থলে মারা যান। পরে ওই জেলেদের ফেরত দেওয়া হয়। 


এবারের ঘটনাটি বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীর এমন আক্রমণ দেশটির সাথে সীমানা লঙ্ঘনের একটি বড় উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতোমধ্যে ঘটনাটির তদন্তে নেমেছে এবং জেলেদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। 


এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক চাপ বৃদ্ধি করার দাবি উঠছে।