দুই কোটি টাকার ব্রীজে উঠতে হয় বাঁশের সিঁড়ি বেয়ে!

নিজস্ব প্রতিবেদক
মো. নাঈম হাসান ঈমন, জেলা প্রতিনিধি (ঝালকাঠি)
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১১ই এপ্রিল ২০২৩ ০৫:৫৫ অপরাহ্ন
দুই কোটি টাকার ব্রীজে উঠতে হয় বাঁশের সিঁড়ি বেয়ে!

ঝালকাঠির রাজাপুরে দুই কোটি টাকার ব্রীজে উঠতে হয় সিঁড়ি বেয়ে। প্রায় ঘটছে ছোট-খাটো দুর্ঘটনা। রাজাপুর উপজেলার শুক্তগড় ইউনিয়ন ভূমি অফিস সংলগ্ন সাংগর খালের ওপর ব্রীজের এমন অবস্থা।


অফিস সূত্রে জানাগেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ সাংগর খালের ওপর ২০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৭.৩ মিটার প্রস্থ আর সিসি গার্ডার ব্রীজ নির্মাণের দরপত্র আহবান করেন। ২,১৭,৯৮,৬৬৭ টাকা ব্যয় মেসার্স হাবিব সন্স-খন্দকার বিজনেন্স নামে ঝালকাঠির একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ঐ ব্রীজের নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পায়। ২০২১ সালের ৫ সেপ্টম্বর ব্রীজ নির্মাণের অনুমতি দেয়া হয়। ২০২২ সালের ৩০ এপ্রিল সম্পূর্ন কাজ শেষ করার কথা থাকলেও এখনও দুইপাশের সংযোগ সড়ক নির্মাণ করেনি ঠিকাদার।


নির্দিষ্ট সময় অতিক্রম করেও কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় ব্রীজ থেকে যানবাহন চলাচল করতে না পারায় ব্রীজ কোন কাজেই আসছে না। ফলে দুই পারের শত শত মানুষ রয়েছে চরম দুর্ভোগে। স্কুল-কলেজের শিকক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষকে নৌকায় পার হতে গিয়ে অনেক সময় নৌকা থেকে পরে ভিজতে হয়েছে। এতে অনেকের স্কুল-কলেজ সহ সাধারণের কাজে যাওয়া বাধাগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে নতুন ব্রীজে উঠার জন্য এলাকাবাসী কাঠ-বাঁশ দিয়ে সিঁড়ি তৈরী করে তাতেই ব্রীজ পার হচ্ছে। প্রায় ১০ থেকে ১২ ফুট উচুঁ ব্রীজে সিড়িঁ বেয়ে উঠা-নামা করতে গিয়ে প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে।


স্থানীয় রহমত আলী, জব্বার হোসেন, কহিনুর বেগম, রাজ্জাক হাওলাদার জানায়, ব্রীজটি নির্মিত হওয়ায় তাদের আশা ছিল জনভোগান্তি দূর হবে বরং এখন উল্টো তাদের দুর্ভোগ বেড়েছে। সিঁড়ি বেয়ে ব্রীজে উঠতে গিয়ে অনেক সময় কোমলমতি শিশুরা প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। বয়স্ক মানুষ কারো সাহায্য ছাড়া ব্রীজে উঠতে পারচ্ছে না। আবার কারো সাহায্য নিয়ে পার হতে খুব কষ্ট হয়। পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসতে হলে তাদের নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এখন রমজানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও সামনে বর্ষাকালে ছেলে-মেয়েদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে স্থানীয় অভিভাবকরা। এছাড়াও চুক্তি অনুযায়ী ঠিকাদার ব্রীজ নির্মাণ করেনি বলেও তারা অভিযোগ করেন।


ব্রীজের ঠিকাদার মো. শাহিন হোসেন জানান, কর্তৃপক্ষের এক এক সময় এক এক রকমের সিদ্ধান্তের কারণে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। এখন একটা চুড়ান্ত সিদ্ধান্তে এসেছি খুব শীগ্রই সংযোগ সড়কের কাজ শুরু করা হবে। উপজেলা প্রকৌশলী অভিজিৎ মজুমদার বলেন, ঠিকাদার শীগ্রই ঐ ব্রীজের বাকি কাজ শুরু করবে।