ভূরুঙ্গামারীতে মাদরাসায় এক পদে দু’ব্যক্তিকে নিয়োগের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
শামসুজ্জোহা সুজন , উপজেলা প্রতিনিধি, (ভূরুঙ্গামারী) কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২৩শে এপ্রিল ২০২৪ ০৬:১৮ অপরাহ্ন
ভূরুঙ্গামারীতে মাদরাসায় এক পদে দু’ব্যক্তিকে নিয়োগের অভিযোগ

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর কামাত আঙ্গারীয়া দাখিল মাদরাসার সুপারিন্টেন্ডেন্টের বিরুদ্ধে অফিস সহকারীর একটি পদে দু'জনকে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার এঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন অফিস সহকারী পদে প্রথমে নিয়োগ পাওয়া সফিয়ার রহমান।


অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, সফিয়ার রহমান প্রায় ২২ বছর যাবত ওই মাদ্রাসায় অফিস সহকারি পদে কর্মরত আছেন। তিনি ২০০২ সালের ১লা সেপ্টেম্বর অফিস সহকারী পদে যোগদান করেন। তার ইনডেক্স নম্বর ২৬৯২৩৩২। তিনি ২০১৪ সালের জুলাই মাসে উচ্চতর স্কেল প্রাপ্ত হন। 


মাদরাসার সুপার সাইদুর রহমান উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের যোগসাজসে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে সম্প্রতি অফিস সহকারী পদে আরেকজনকে নিয়োগ দিয়েছেন।


বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগের সর্বশেষ নীতিমালা অনুযায়ী মাদরাসাটিতে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর (এসিও) নামের তৃতীয় শ্রেণির একটি পদ রয়েছে।


এসিও পদটির নাম ২০০৩ সালে ক্লার্ক কাম টাইপিষ্ট (সিটি) ছিল। পরবর্তীতে সিটি পদটি নাম পরিবর্তন করে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর (এসিও) করা হয়। সুপারিন্টেন্ডেন্টেদের তা সংশোধন করার নির্দেশ দেয়া হয়।


কিন্তু সুপারিন্টেন্ডেন্ট তা সংশোধন না করে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের এমপিও সীটে সফিয়ার রহমানকে এবতেদায়ি জুনিয়র শিক্ষক (ইবি-টি) দেখিয়ে গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। এসিও পদে মো. খালেদুজ্জামান নামের একজনকে নিয়োগ দেন। যার ইনডেক্স নম্বর০০৫৪১৮০, এমপিও ভুক্তির তারিখ মার্চ, ২০২৪ইং।


সুপারিন্টেন্ডেন্ট সাইদুর রহমান বলেন, ‘কাজ করতে গেলে ভুল হতেই পারে। সোমবার এবিষয়ে ইউএনও স‍্যারের সাথে বৈঠক হয়েছে। সংশোধনের জন‍্য এক মাস সময় দেওয়া হয়েছে। এক পদে দুইজনের নিয়োগ কি ভাবে সম্ভব এমন প্রশ্নের জবাব দিতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।'


উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রহমান বলেন, ‘মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নির্দেশ মোতাবেক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিষয়টি অন্যায় হয়েছে। এবিষয়ে মাদরাসা সুপারের বিরুদ্ধে তদন্ত হবে।'


উল্লেখ্য দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ভূরুঙ্গামারী নেহাল উদ্দিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় ভূরুঙ্গামারী উপজেলার তৎকালীন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রহমানকে দায়িত্বে অবহেলার কারনে সরকারী কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর (২)(খ)(আ) অনুসারে ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। 


অপরদিকে উপজেলার ২১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষকরা ওই শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে তাকে পুরনায় ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দায়িত্ব না দেওয়ার জন্য ২০২৩ সালের ১৯ মার্চ কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করেছিলেন। কিন্তু এসব অভিযোগের তোয়াক্কা না করে তার বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করে পুনরায় তাকে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়।

 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম ফেরদৌস বলেন, মাদরাসার সকল পক্ষকে ডেকে বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।