ভূঞাপুরে আমন ধানের চারা সংকটে কৃষক

নিজস্ব প্রতিবেদক
ফুয়াদ হাসান রঞ্জু, উপজেলা প্রতিনিধি, ভূঞাপুর, টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: শনিবার ২৪শে আগস্ট ২০১৯ ০৬:২৩ অপরাহ্ন
ভূঞাপুরে আমন ধানের চারা সংকটে কৃষক

সাম্প্রতিক টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল ও গ্রামঞ্চলের ফসলি জমিতে পানি প্রবেশ করায় কৃষকের স্বপ্নের রোপনকৃত ধানের বীজতলা তলিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। যার ফলে আমন ধানের মৌসুমে বিভিন্ন জাতের ধানের চারার তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে উপজেলার ধান চাষীদের। এদিকে, বন্যার সময় ধানের চারা রোপন করার উপযুক্ত সময় হলেও বন্যার কারণে তা সম্ভব হয়নি। যার কারণে মাস খানেক পিছিয়ে গেলেও বর্তমানে ধানের চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা। কিন্তু ধান চাষে ব্যস্ততা বাড়লেও কৃষকদের ধানের চারা সংকটে পড়ায় দিশেহারা হয়ে পড়ছে তারা।

এদিকে, গত জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহের শুরুতেই টানা ভারি বর্ষণ এবং উজানের পাহাড়ি ঢলে উপজেলার যমুনা নদীর বিভিন্ন অংশে খাল-বিল দিয়ে পানি প্রবেশ করে দেড় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে করে শত শত হেক্টর জমিতে আমন ধানের বীজতলা পানির নিচে তলিয়ে পচে নষ্ট হয়ে যায়। অপর দিকে কৃষকদের এমন পরিস্থিতিতে ধানের চারা প্রণোদনা দিতে চোখে পড়েনি। সরেজমিনে উপজেলার গোবিন্দাসী, নিকরাইল, গাবসারা, অলোয়া, অর্জুনা, ফলদা ও পৌরসভার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে কৃষকদের সাথে কথা বলে তাদের এ দুর্দশার চিত্র দেখা যায়। দেখা যায়, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে ধান চাষে মাঠে নেমে পড়ে কৃষকরা। কিন্তু ধানের চারা গাছ নষ্ট হওয়ায় চারার সংকট দেখা দিয়েছে তাদের মাঝে। ফলে চাষিরা উঁচু অঞ্চলে যেখানে বীজতলা রয়েছে সেখানে ছুটছেন আমন ধানের চারা সংগ্রহে।

উপজেলার গোবিন্দাসী, নিকরাইল, মাটিকাটা, কুঠিবয়ড়া ও শিয়ালকোল হাটে ঘুরে দেখা যায়, জলাবদ্ধতা ও বন্যায় বীজতলা নষ্ট হওয়ায় আমনের চারার দামও বেড়েছে কয়েক গুণ। তাই কৃষকরা বাধ্য হয়ে দ্বিগুণ দাম দিয়েই চারা সংগ্রহ করতে হচ্ছে কৃষকদের। উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের রুহুলী গ্রামের কৃষক দুলাল মিয়া বলেন, এবারের বন্যায় আমন চাষের বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। জমিতে লাগানোর মতো একটি চারাও নেই। কোথাও ঘুরে ধানের চারা পাচ্ছি না। যা পাচ্ছি তার দামও অনেক চড়া। তিনি আরোও বলেন, এ পর্যন্ত কৃষি অফিস থেকে আমাদেরকে কোনো সহযোগিতা করতে আসেনি।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে জানা যায়, বন্যার কারণে উপজেলার গোবিন্দাসী, নিকরাইল, অলোয়া, অর্জুনা, ফলদা ও পৌর এলাকায় সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে বীজতলায়। বোনা আমন ক্ষতি হয়েছে মোট ১ হাজার ১’শ ৯২ হেক্টর জমি। আউশ ধানের বীজতলা সর্বমোট ১ হাজার ১’শ ৯.৯০ হেক্টর জমি। এতে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক পরিবার রয়েছে ৭ হাজার ৪’শ ২০ জন। মোট ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার রয়েছে ৮ হাজার ১’শ ও বোরো আমন ক্ষতি হয়েছে ১’শ ৭.২৫ হেক্টর জমি। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার রয়েছে ৬ হাজার ২’শ ১০ জন। এসব ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মাঝে কৃষি প্রণোদনা সহযোগিতা করা হবে বলে জানায় কৃষি অফিস।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব