যুবলীগ নেতা সম্রাট গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: শনিবার ২৮শে সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৫৩ অপরাহ্ন
যুবলীগ নেতা সম্রাট গ্রেফতার

ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দারা। রাজধানীর বনানী এলাকার একটি বহুতল ভবন থেকে গতকাল শুক্রবার তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কোনো বাহিনী বিষয়টি প্রকাশ্যে স্বীকার না করলেও সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র এর সত্যতা নিশ্চিত করেছে। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট চলমান ক্যাসিনো-জুয়াবিরোধী অভিযানের শুরু থেকে তাদের নজরদারির মধ্যেই ছিলেন। এই সময়ের মধ্যে তিনি বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও চালিয়ে ছিলেন। তবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতার কারণে তিনি দেশ ছাড়তে পারেননি। 

ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছাকাছি পৌঁছেও তিনি ফিরে আসতে বাধ্য হন। পরে কাকরাইলে ভূঁইয়া ম্যানশনে ব্যক্তিগত কার্যালয়ে টানা ছয় দিন অবস্থান করেন। আর পাহারায় বসান শতাধিক যুবককে।  সেখান থেকে গত রোববার তিনি বনানীর ডিওএইচএস এলাকার একটি বাসায় অবস্থান করছিলেন। সর্বশেষ সেখান থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, ‘যুবলীগ নেতা সম্রাট ঢাকাতেই অবস্থান করছেন এবং আমাদের নজরদারির মধ্যেই আছেন। তাকে গ্রেফতারের বিষয়টি এখনই প্রকাশযোগ্য নয়। সবুজ সংকেত পেলেই তার বিষয়টি প্রকাশ করা হবে।’

সূত্র জানায়, যুবলীগের প্রভাবশালী এই নেতা গ্রেফতার বা গ্রেপ্তার এড়াতে ক্ষমতাসীন দলের হাইকমান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার চেষ্টা করে আসছিলেন। হাইকমান্ডের সঙ্গে তিনি দফায় দফায় কথাও বলেছেন। তার কাছ থেকে সুবিধা নেওয়া প্রভাবশালীচক্র এক্ষেত্রে মাধ্যম হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছিল। তবে শেষ পর্যন্ত দলের হাইকমান্ড থেকে সবুজ সংকেত পেয়েই সম্রাটকে গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত নেয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

যুবলীগ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (সদ্য বহিষ্কৃত) খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ওরফে ক্যাসিনো খালেদ গ্রেপ্তার হওয়ার পরই ভড়কে যান সম্রাট। যেকোনো মূল্যে গ্রেপ্তার এড়াতে শুরু করেন নানা মহলে লবিং। তিনি দলীয় হাইকমান্ডকে দফায় দফায় বুঝাতে চেয়েছেন দলের প্রতি তাঁর অবদানের কথা। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।

এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, যুবলীগ নেতা সম্রাট গোয়েন্দা হেফাজতেই আছেন। এর আগে গ্রেপ্তার হওয়া যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও গোলাম কিবরিয়া শামীমকে জিজ্ঞাসাবাদে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছেন তদন্তসংশ্লিষ্টরা। আর ওই দুজনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে সম্রাট দম্পতির ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। একই সঙ্গে সম্রাটের আর্থিক লেনদেনের বিষয়টির চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সরকারের কয়েকটি সংস্থা। আর তাকে জড়িয়ে ক্যাসিনো বিষয়ক তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে।

অন্যদিকে সম্রাট গ্রেফতার হওয়ার পরপরই গা ঢাকা দিয়েছেন সম্রাটের ঘনিষ্ঠ সহযোগী যুবলীগ দক্ষিণের নেতা আরমানুল হক আরমান, মোমিনুল হক সাঈদ ওরফে সাঈদ, সম্রাটের ভাই বাদল, জুয়াড়ি খোরশেদ আলমসহ আরো অনেকে। তাদেরও গ্রেপ্তার করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো অভিযান অব্যাহত রেখেছে। সূত্র : কালের কণ্ঠ

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব