তরুণ বয়সে দেশ মাতৃকার জন্য লড়াই করেছেন পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে। ছিলেন গেরিলা যোদ্ধা। রাজনৈতিক জীবনেও ছিলেন সফল। একাধিকবারের সংসদ সদস্য। ছিলেন দুইদফা মন্ত্রিপরিষদের সদস্য। অবিভক্ত ঢাকার সবশেষ মেয়র। বিএনপির প্রভাবশালী নেতা সাদেক হোসেন খোকার জীবনের শেষ কটি বছর গেছে ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে। এই বীর যোদ্ধা প্রায় পাঁচবছর চিকিৎসাধীন ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে।গত সোমবার নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনের মেমোরিয়াল স্লোয়ান ক্যাটারিং ক্যান্সার সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার মারা যান বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান খোকা। বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। ওইদিন নিউ ইয়র্কে কুইন্সের জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে খোকার প্রথম জানাজা হয়।
পাসপোর্ট না থাকায় ট্রাভেল ডকুমেন্ট নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গতকাল সকালে কফিনবন্দি হয়ে দেশে ফেরেন খোকা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কয়েকদফা জানাজা আর শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন শেষে তার ইচ্ছামতো জুরাইনে মায়ের কবরে সমাহিত করা হয়।এর আগে সকাল সাড়ে আটটার দিকে খোকার মরদেহ বাংলাদেশে পৌঁছায়। বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসসহ দলের শীর্ষ নেতারা তা গ্রহণ করেন। পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সংসদে। দক্ষিণ প্লাজায় তার জানাজা হয়। এতে আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা তোফায়েল আহমেদ, সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী, জাতীয় পার্টি, বিএনপি, ওয়ার্কার্স পার্টি, এলডিপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, ও সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তারা-কর্মচারীরা অংশ নেন।জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের খোকার বড় ছেলে ইশরাক হোসেন বাবার জন্য সবার কাছে দোয়া চান। পাসপোর্ট না থাকায় জীবিত অবস্থায় তার বাবা দেশে ফেরতে না পারার আক্ষেপ নিয়ে মারা গেছেন বলেও দাবি করেন তিনি। তবে দেশে আনার ক্ষেত্রে সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য ধন্যবাদ জানান ইশরাক।
সংসদ ভবন থেকে তার মরদেহ নিয়ে আসা হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত তার মরদেহ রাখা হয়। সেখানে রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পাশাপাশি অনেকে ব্যক্তিগতভাবে তার কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। সংগঠনগুলোর মধ্যে সিপিবি, গণফোরাম, এলডিপি, মনোবিজ্ঞান অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, জাগপা, জাতীয়তাবাদী মহিলা দল, তাঁতী দল, নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ জাসদ, বাসদ, জাতীয় হিন্দু মহাজোট, ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী, ছাত্র ইউনিয়ন, গণসংহতি আন্দোলন, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ও বাংলাদেশ যুব সমিতির নেতারা শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।সেখানে খোকাপুত্র অভিযোগ করে বলেন, তার বাবা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। আজকে আমরা ভুক্তভোগী। আমার বাবা রাজনীতির প্রতিহিংসার শিকার হয়েছে। গত পাঁচ বছরে আমি বাবার সঙ্গে অনেক সময় কাটিয়েছি। তার থেকে আমি অনেক কিছু শিখতে পেরেছি।’ বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান করতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান ইশরাক।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।