রামুতে সরকারবিরোধী অপপ্রচারকারী চক্রের মূল হোতা গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ শামছুল হক, উপজেলা প্রতিনিধি, উল্লাপাড়া, সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত: শুক্রবার ৮ই নভেম্বর ২০১৯ ১০:১২ পূর্বাহ্ন
রামুতে সরকারবিরোধী অপপ্রচারকারী চক্রের মূল হোতা গ্রেপ্তার

ফেসবুকে একের পর এক ভুয়া আইডি খুলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যসহ সরকারবিরোধী নানা অপপ্রচার চালানোর একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সন্ধান মিলেছে কক্সবাজারের রামুতে। রামু থানা পুলিশ বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে চক্রের প্রধান হোতাকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার হওয়া যুবকের নাম সৈয়দ আবুল আলা (৩৩)। তিনি স্থানীয় জামায়াত-শিবিরের বড় মাপের একজন ক্যাডার। পুলিশ জানিয়েছে, রামু উপজেলার খুনিয়া পালং ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের জামায়াত পাড়া হিসাবে পরিচিত দারিয়ারদিঘী মৌলভী পাড়ার জামায়াত নেতা হাফেজ এহসানের পুত্র সৈয়দ আবুল আলা দীর্ঘদিন ধরে সরকারবিরোধী অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছেন। গ্রেপ্তার হওয়া জামায়াত-শিবির ক্যাডার আবুল আলা স্থানীয় সরকারবিরোধী সংঘবদ্ধ একটি চক্রের প্রধান হোতা হিসাবে কাজ করছিলেন।

রামু থানার ওসি (তদন্ত) এস এম মিজানুর রহমান বলেন, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরেই ‘জামায়াত পাড়া’ হিসেবে পরিচিত এলাকাটিতে ডেরা স্থাপন করে সরকারবিরোধী নানা অপপ্রচার চালিয়ে আসছিল সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। একটি ল্যাপটপ সহ হাতে নাতে চক্রের প্রধান হোতা আবুল আলাকে গ্রেপ্তার করার পরই সব খোলাসা হয়ে পড়তে শুরু হয়েছে। আবুল আলা পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ৪টি ফেসবুক ভুয়া আইডি ব্যবহারের কথা স্বীকার করেছে। এসব আইডিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কন্যা সায়দা ওয়াজেদ পুতুল, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ সরকার ও সরকারি দল নিয়ে নানা অপপ্রচারের তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে যে, এলাকার জামায়াত-শিবির ও বিএনপি এবং অঙ্গ সংগটনের নেতা-কর্মীদের নিয়ে আবুল আলা একটি সংঘবদ্ধ চক্র গঠণ করে এমন কাজ চালিয়ে আসছিলেন।

রামু থানার ওসি (তদন্ত) আরো জানান, এলাকাটির সিংহভাগ বাসিন্দা জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত। দারিয়ারদিঘী নামের এই গ্রামেই এক সময় জামায়াত-শিবিরের আশ্রয়ে ছিল রোহিঙ্গা জঙ্গি গোষ্ঠির আস্তানাও। কয়েক বছর আগেও গ্রামে থাকা মুষ্টিমেয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের জীবনযাপন করতে হয়েছে অত্যন্ত দুর্বিষহ অবস্থায়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে জামায়াত-শিবির ঘাপটি মেরে থাকলেও নিরবেই চালিয়ে যাচ্ছে সরকারবিরোধী আপপ্রচার।

পুলিশ আবুল আলার ল্যাপটপটি উদ্ধার করেছে তার ঘরের মুরগির খামার থেকে। সেই ল্যাপটপে অনেক তথ্যও মিলেছে। পাওয়া গেছে রোহিঙ্গা জঙ্গি গোষ্ঠির কথিত নেতা পাকিস্তানি বংশোদ্ভুত সৌদি নাগরিক আতাউল্লাহর কানকশনও। তার আস্তানা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে নারী ও শিশু পাচার সংক্রান্ত নানা কাগজ পত্র। উদ্ধার করা হয়েছে রোহিঙ্গাদের জাল জন্মসনদ, জাল পাসপোর্ট, অনেক অফিসের সিলমোহরসহ অন্যান্য কাগজপত্র।

আবুল আলার বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের জঙ্গি প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। এমনকি আবুল আলার ব্যবহৃত যে ডায়রিটি পাওয়া গেছে তাতে লাখ লাখ টাকার লেনদেনের হিসাবও রয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা হচ্ছে, গ্রেপ্তার হওয়া আবুল আলা একজন বড় মাপের মাদক ও মানব পাচারকারি। তার বিরুদ্ধে রামু থানায় নারী ও শিশু পাচার, জাল জালিয়াতি ও হত্যা প্রচেষ্টাসহ ৬টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। গতকালই রামু থানায় তার বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা রুজু করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ইনিউজ ৭১/এম.আর