ক্ষমতার রাজনীতিতে কৌশলের নামে সাম্প্রদায়িক শক্তির সাথে আপোষ-আঁতাত দিয়ে শুরু করে পরবর্তীতে নীতি হিসেবে সাম্প্রদায়িকতাকে গ্রহণ করার ইতিহাস এ উপমহাদেশের রাজনীতিতে বিরল নয়।” বাংলাদেশ কি সে পথেই হাটছে?এজন্য বলা "ভাবিয়া করিও কাজ করিয়া ভাবিও না"।করোনাভাইরাস সারাবিশ্বব্যাপী ছড়িয়েছে।আমাদের দেশও যথেষ্ট সতর্ক ছিলো।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম,মিডিয়া,জনগনকে সচেতন করে তুলছিল।সরকারও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে জনগনকে সচেতন ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছিল। একটি দেশে ১৮কোটি জনগন সেখানে তিনজন মানুষকে করোনা সনাক্তকরণ করে যে রাষ্ট্রীয় ঢাকঢোল পেটানো হলো।রাষ্ট্রীয় একটি গুরুত্বপুর্ণ অনুষ্ঠান পুনর্বিন্যাস করা হলো।যার ফলে দেশের জনগনের মধ্য এক মহা আতংক সৃষ্টি হলো।আর বহিঃবিশ্ব মনে করলো বাংলাদেশে না জানি কি হয়ে গিয়েছে।
বাংলাদেশসহ সাত দেশের সঙ্গে বিমান চলাচল বন্ধ কুয়েতের।।সুত্রঃ বিবিসি। বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের নাগরিকদের উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে কাতার।যে সকল শ্রমিক ছুটিতে দেশে এসেছে তাদেরকেও ফিরতে নিষেধাজ্ঞা। এটি সোমবার থেকে কার্যকর হয়েছে।। সুত্রঃ বিবিসি "কাতার ও কুয়েত বাংলাদেশি যাত্রীদের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেয়ায়, গন্তব্য দুটিতে চালানো সব ফ্লাইট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।" করোনাভাইরাস আক্রান্ত বিশ্বের সাতটি দেশে বাংলাদেশ অন্তর্ভুক্ত।। বিমানের ৭৪ ফ্লাইট বাতিল।সুত্রঃ সমকাল। এরফলে এক দিনেই ১৭ হাজার কোটি টাকা হারালো পুঁজিবাজার। "রাজধানীজুড়ে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের সংকট" করোনাভাইরাস প্রতিরোধের নামে মাস্ক ও হ্যন্ড সানিটাইজার নিয়ে চলছে হরিলুট।সিন্ডিকেট করে ৫/১০টাকার জিনিসের দাম নেওয়া হচ্ছে ২০০টাকা।।
কি থেকে কি হয়ে গেল।আরো বড় বিপর্যয় সামনে আসছে। আজকে আবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ঘোষণা করেছেন বাংলাদেশে আর নুতন করে কোন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রুগী সনাক্ত করা হয় নি। যে ৩জন সনাক্ত হয়েছিলেন সে ৩ জনই সুস্থ, করোনায় নতুন কেউ আক্রান্ত হয়নি: আইইডিসিআর। এরপরেও আমাদের দেশের কিছু মানুষ করোনা নিয়ে প্রচার চালাচ্ছে। কিন্তু কেন?? এটা আর এখন বলে কি লাভ আমাদের ক্ষতি যা হবার সেটা হয়ে গিয়েছে।সামনে হয়তো আরো বড় কোন বিপর্যয় অপেক্ষা করছে।
"করোনা ভাইরাসে আক্রান্তে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে বাংলাদেশের পোশাক শ্রমিকরা। যার প্রধান কারন এদেশে গত ডিসেম্বরে চীন থেকে পোশাক উৎপাদনের জন্য যে কাপড় আর একসেসরিস দেশের কারখানাগুলোতে স্টোক আছে ও ঐ কাপড়গুলোর কাজ চলমাম, ঐ সকল কাপড়-সামগ্রীতে করোনার জীবাণু থাকতে পারে। অধিকাংশ শ্রমিকরা দুপুরের খাবারের পর ঝুট কাপড় দিয়ে হাত-মুখ মুছে, এতে জীবাণু ছড়াতে পারে, অধিকাংশ শ্রমিকরা মাস্ক ব্যবহার করেনা। একত্রে কয়েক হাজার করে শ্রমিকরা একসাথে ১১-১৪ঘন্টা থাকার ফলে এ ভাইরাস দ্রুত ছড়াতে পারে। "।এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে যেকোন সময় বিপর্যয় নেমে আসতে পারে গার্মেন্টস খাতে।
একজন ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে একটি রাষ্ট্র এভাবে ক্ষতির সন্মুখীন হবার নজির ইতিহাসে বিরল।আমরা আশাবাদী আমাদের দেশ কোন অবস্থায় আর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবে না ইনশাল্লাহ। যে তিনজন আক্রান্ত হয়েছেন তারাও চিকিৎসা সেবায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাবেন।তবে একটি অদুরদু্র্শি সিদ্ধান্ত আজকে জাতিকে যে ক্ষত সৃষ্টি করেছে সেটা সহজে উপসম হবে না।।বাংলাদেশের সিংহভাগ জনগনের মতামতকে কি অন্য কোনভাবে মিমাংসা করা যেতো না।কেন আমরা এমন মরণ খেলার পথ বেছে নিলাম।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ১৭ মার্চ ঢাকায় আয়োজিত মুজিব শতবর্ষের রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নরেন্দ্র মোদি। গতকাল রোববার ঢাকায় তিনজনের করোনাভাইরাসে সংক্রমণের ঘটনা জানায় সরকার। প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাস ধরা পড়ল বাংলাদেশে। ওই তিনজনের দুজন ইতালি থেকে বাংলাদেশে এসেছেন। ওই দুজনের সংস্পর্শে আরও একজন আক্রান্ত হন। এই ব্যক্তি তাঁদের পরিবারের সদস্য। এমন পরিস্থিতিতে গত রাতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী জানান, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান কাটছাঁট করা হয়েছে।
১৭ মার্চ জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠেয় মূল অনুষ্ঠানটি ওই দিন হচ্ছে না। করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জনস্বার্থে ও জনকল্যাণে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পরে এই সমাবেশের তারিখ চূড়ান্ত হবে। ১৭ মার্চের জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডের অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ বিদেশি অতিথিদের আসার কথা ছিল। এরপর আজ জানা গেল, মোদিসহ তারা কেউ বাংলাদেশ সফরে আসছেন না।ইতিমধ্যে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে কেন্দ্র করে নয়াদিল্লিতে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় রাজধানী ঢাকায় মোদির বাংলাদেশ সফর নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। মোদির বাংলাদেশ সফর বাতিলের দাবিও উঠেছে। তবে এর মধ্যে ঢাকায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে সেই সফর পিছিয়ে গেল।
অনেকেই বলছেন একটি পক্ষের বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকীতে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আগমনে আপত্তিকে কেন্দ্র করে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতেই সরকার এজাতীয় সিদ্বান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। সেটা সত্য হতেও পারে নাও পারে তবে যদি করোনাভাইরাস এর কারণেও হয় তবে একদুই দিন অপেক্ষা করেও নেওয়া যেতো।কারন আজকেই আমরা জানতে পারলাম যে ৩জন আক্রান্ত হয়েছিলেন তারা সুস্থ হয়ে গিয়েছেন এবং নুতন করে কেউ আক্রান্ত হয় নি।আর যদি কোন অপশক্তির চাপের কারনে হয় সেক্ষেত্রেও আলোচনার দরজা খোলা ছিল।বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর সাথে এদেশের কোটি কোটি জনগনের হৃদয়ের সম্পর্ক। তার অনুষ্ঠান বিঘ্নিত হোক এটা জনগন মেনে নিবে না।
কূটনীতির জগতের অনেকেই মনে করছেন, বিষয়টি শাপে বর হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এই ঢাকা সফর নিয়ে বাংলাদেশে প্রবল অসন্তোষের বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল। সিএএ এবং এনআরসি নিয়ে সে দেশের সরকারি, রাজনৈতিক এবং সামাজিক পরিসরে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। দিল্লির সাম্প্রতিক হিংসা বিষয়টিতে ঘৃতাহুতি হয়ে দাঁড়ায়। ভারতে সংখ্যালঘু তথা মুসলমানদের উপর অত্যাচার করছেন মোদী, অমিত শাহ—এই মর্মে মুখর হতে থাকেন সে দেশের অনেকে। শুধু বিএনপি, জামাত বা অন্যান্য বিরোধী দলই নয়, আওয়ামি লিগের নতুন প্রজন্মের নেতা-কর্মীরাও মোদী-বিরোধিতা শুরু করেন। মোদীর প্রস্তাবিত সফরে বিক্ষোভ দেখানোর কর্মসূচিও নেয় হাসিনা-বিরোধী জোট। গত সপ্তাহে মোদী বিরোধিতায় মিছিল করে বিভিন্ন ইসলামিক দল।
পরিস্থিতি এতটাই ঘোরালো হয়ে দাঁড়াচ্ছিল যে, হাসিনাকে আওয়ামি লিগের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশ দিতে হয় সংযম বজায় রাখার। সূত্রের খবর, তিনি নেতাদের এটাও বলেন যে, ভারত সরকার যদি ধর্মনিরপেক্ষতা বজায় রাখতে না-পারে সেটা তাদের ব্যর্থতা। বাংলাদেশ তাতে নাক গলাবে না। মোদীর সফরের সময় কোনও বেসুর তৈরি হলে তা যে তাঁর পক্ষে চরম বিড়ম্বনার কারণ হবে, সে কথাও দলের নেতাদের জানিয়েছিলেন হাসিনা।আমাদের শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের পরিবেশ এখনো হয়নি। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেবেন।ঢাকা-১০ আসন ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সেখানেও জনসমাগম হবে।তাহলে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান বাতিল কেন??এটাও জনমনে আজ প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে।তাহলে কি এসব ক্ষেত্রে করোনাভাইরাস এর কোন ভয় নেই? নাকি বড় কোন বিপর্যয় এড়াতে আজ দেশকে এতোবড় ঝুকির মধ্যে নিয়ে যাওয়া হলো।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।