ভোলার বোরহানউদ্দিনে করোনা আতঙ্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে যেমন বেড়েছে উদ্বেগ, বিস্ময়কর হলেও চিকিৎসকদের মনেও রয়েছে একই রকমের উদ্বেগ। কারণ রোগীদের চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত ডাক্তাররাই রয়েছেন অনেকটা অরক্ষিত। এখনও পর্যন্ত করোনা শনাক্ত করার কোনো কিট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেনি। ফলে এখন পর্যন্ত করোনা শনাক্ত করার কোন উপায় নেই। একই রোগ লক্ষণের সাথে মিলে যাওয়ায় প্রায় সব চিকিৎসকই সাধারণ জ্বর-সর্দি-কাশি রোগী এলেও আতঙ্কের মধ্যে থাকছেন।
কারণ হিসেবে বলছেন, এখনও হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য কর্মীদের কোন পারসোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্টের (পিপিই) নেই। তাহলে ডাক্তারদেরই সুরক্ষা ব্যবস্থা না থাকলে তারা কিভাবে চিকিৎসা সেবা দিবেন এ নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। যদিও সংক্রমণ ঠেকাতে সব রকম প্রস্তুতি রয়েছে এমন দাবি করে আসছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
শনিবার সকাল ১১ টায় হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায় মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডের বারান্দায় যত্রতত্র ব্যবহৃত স্যালাইন ব্যাগ, ইঞ্জেকশনের খালি এ্যাম্পুল, ব্যবহৃত ঔষধের বোতল পড়ে আছে। ওই ওয়ার্ডের বাথরুমের গন্ধে অসহনীয় অবস্থা। বাথরুমে হ্যান্ড স্যানিটারাইজার, হেক্সিসল বা সাবানের বালাই নেই। চিকিৎসারত ১০ মাসর শিশু মেহেদী হাসানের বাবা মো. ইউসুফ জানান, বাথরুমের এ অবস্থার কথা নার্সকে জানিয়েও কোন লাভ হয়নি। তিনি তার সন্তানকে বাড়িতে নিয়ে যাবার কথা ভাবছেন।
ওই ওয়ার্ডের ওয়ার্ড ইনচার্জ প্রীতি বাড়’ই জানান, সকালে ওয়ার্ডের ৩৩ টি সিটে রোগীর পরও অতিরিক্ত রোগী ছিল। সবার চিকিৎসাসেবা স্বাভাবিক বলে তিনি দাবি করেন। তবে তাকে গ্লাবস, মাক্সের মত সুরক্ষা গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। একই অবস্থা পুরুষ ওয়ার্ডের। ওই ওয়ার্ডের বেসিন দূরে থাক বাথরুমেও নূন্যতম সাবান নেই। বাথরুমের প্যান মনুষ্য বর্জ্যে ভরা। ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স রাশিদা খাতুন জানান, ২০ টি বেডে ৭ জন রোগী আছেন। সেবা প্রদানও স্বাভাবিক। তার হাত মুখেও সুরক্ষা ব্যবস্থা ছিলনা। আউটডোরে ডাক্তাররাও রোগী দেখেছেন সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়া।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তপতী চৌধুরী জানান, করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণের কোন কিট আসেনি। আসলেই পারসোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্টের (পিপিই) না থাকায় তারাও সুরক্ষিত নন। তিনি আরো জানান, হাসপাতালে ৫ টি আইসোলেশন বেড প্রস্তুত রয়েছে। বাথরুম, সাবান, যত্রতত্র রোগীর ব্যবহৃত স্যালাইন ব্যাগ, ইঞ্জেকশনের খালি এ্যাম্পুল, ব্যবহৃত ঔষধের বোতল ফেলে রাখার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান, বাথরুমে সাবান দিলে কিছুক্ষণ পর আর পাওয়া যায়না। রোগীর সাথে যারা আসে তারা নিয়ে যেতে পারে। তাদের জনবল সংকট থাকায় বাইরের লোক দিয়ে পরিচ্ছন্নতার কাজগুলো করতে হচ্ছে। এজন্য একটু সমস্যা হচ্ছে।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।