সিটি করপোরেশনের মশার ওষুধের সাথে মেশানো হতো পানি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: বুধবার ২৫শে নভেম্বর ২০২০ ১১:১৫ পূর্বাহ্ন
 সিটি করপোরেশনের মশার ওষুধের সাথে মেশানো হতো পানি

মশা খায় রক্ত আর ওষুধ খায় চোরে। সিটি করপোরেশনের ওষুধ চুরি করে বিক্রি করায় গত বছর ডেঙ্গু ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। চমকে ওঠার মতো এমন তথ্য ফাঁস করলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির কাউন্সিলর ফরিদউদ্দিন রতন। তবে অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেন সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন। দক্ষিণ সিটি করপোরেশন জানায়, চুরিসহ নানা অপকর্মের দায়ে এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে অপসারণ করা হয়েছে।রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় মশা নিধনের এমন কার্যক্রম মাঝেমধ্যে চোখে পড়ে। আর শহরতলীতে ঠিকমতো ওষুধ না ছিটানোর অভিযোগ পুরোনো।

তবে ওষুধ ছিটানো হোক আর না হোক মশার উপদ্রব কমে না। এমন পরিস্থিতিতে ওষুধের কার্যকরিতা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন।ওষুধের মান নিয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। বিগতদিনে অতিরিক্ত পানি মিশিয়ে ওষুধ ছিটানোয় তা কোনো কাজে আসতো না বলে স্বীকার করেন দক্ষিণ সিটির ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদউদ্দিন রতন। তিনি খোলা বাজারে মশার ওষুধ বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ করেন সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন ও তার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। 

ডিএসসির ২০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন রতন বলেন, এই ওষুধ আগে কালো বাজারে বিক্রি হতো। এরোসল কোম্পানি ও কয়েল কোম্পানিতে বিক্রি হতো। আবার এরাই ওষুধ কিনে নিয়ে নগর ভবনের ওষুধের সাথে পানি মিশিয়ে দিতো। ওষুধ কাজ করেনি কারণ কারণ ওষুধে ভেজাল দিতো। আগের মেয়রের সময় বোর্ড মিটিং বার বার বলেছি ওষুধ নবাবপুরে বিক্রি হয় এবং গোডাউনে অভিযান পরিচালনা করা দরকার। এটির জন্য একটি কমিটি করা হয়েছিল কিন্তু সেখানে আমাকে রাখা হয়নি। 

এই বিষয়ে ডিএসসিসির সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এরকম কোনো কিছু তার জানা নেই। এদিকে দক্ষিণ সিটির মুখপাত্র আবু নাসের জানান, ওষুধ চুরিসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে এরইমধ্যে অপসারণ করা হয়েছে। এ কার্যক্রমের সাথে জড়িত একজনকে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটির উপ-প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লে. কর্নেল মো. গোলাম মোস্তফা সারওয়ার বলেন, ওষুধ চুরি ঠেকাতে আমরা তৎপর রয়েছি।

আমাদের মশককর্মীরা জানে, যে কোনো সময় যে কোনো একজন অফিসার চলে আসতে পারে। নাগরিক সেবা নিশ্চিতে নগর কর্তৃপক্ষকে আরো মনোযোগী হওয়ার তাগিদ দিয়ে নগরবিদ, স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, এ দিচ্ছে ও পাচ্ছে না। এর একমাত্র কারণ তাদের মাঝে সংযোগ নেই। নিয়মিত পর্যবেক্ষণ রিপোর্টের মধ্য দিয়ে কাজটি করা উচিত।আবারও করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় এখনই ডেঙ্গুর লাগাম টানতে না পারলে বড় মাশুল দিতে হতে পারে বলে সতর্ক করেন বিশেষজ্ঞরা।