হিলিতে বোরো রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষক ও শ্রমিকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
গোলাম রব্বানী, নিজস্ব প্রতিনিধি (দিনাজপুর)
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ৮ই ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০২:৫৩ অপরাহ্ন
হিলিতে বোরো রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষক ও শ্রমিকরা

দিনাজপুরের হাকিমপুর হিলিতে বোরো রোপণ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক শ্রমিকরা। গত চার দিন আগে হঠাৎ বৃষ্টি ও কয়েক দিনের শৈত্য প্রবাহ আর ঘন কুয়াশা উপক্ষো করেই জমি তৈরি করে তাতে বোরো ধান চাষ করতে শুরু করেছেন চাষিরা। হাকিমপুর উপজেলায় এবার বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ হাজার ১০৫ হেক্টর জমি। আবহাওয়া অনূকূলে থাকলে বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর। 


মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা যায়, মাঠে কাজ করছেন কৃষকেরা। বোরো আবাদের জন্য  বিঘাপ্রতি ২০ কেজি ডেপ, ১২ কেজি পটাস, ৫ কেজি জিপসাম এবং ৫ থেকে ৭ ভ্যান গোবর সার মিশিয়ে জমিতে পানি দিয়ে কাদা তৈরি করছেন চাষিরা। পরে তারা বীজতলা থেকে চারা এনে সেই জমিতে রোপন করছেন কৃষি শ্রমিকরা। এর পর এক সপ্তাহের মধ্যে আগাছা নাশক ঔষধ স্প্রে ও তিন সপ্তাহ পরে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করে চাষিরা। ইতোমধ্যে উপজেলায় প্রায় ৭০ শতাংশ জমিতে চারা রোপন হয়েছে। 


চাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ইরি বোরো ধান রোপনের শুরু থেকে কাটা ও মাড়াই পর্যন্ত সময় লাগে ৯০ দিন। কাটা-মাড়াই পর্যন্ত বোরো চাষিদের খরচ হয় প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। গেলো বোরো মৌসুমে ধানের দাম বেশি পাওয়ায় এবারও দাম ভালো পাবার আশায় আছেন ইরি চাষিরা।


হিলির মহাড়াপাড়ার কৃষক গোলাম মোস্তাফিজার রহমান মিলন বলেন, এবার আমি প্রায় ১৭ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করছি। অর্ধেক জমিতে চারা রোপন হয়ে গেছে, আর অল্প বাঁকি আছে। কয়েক দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ জমিতে চারা রোপন শেষ হবে। গতবার ফসলের দাম ভালো পেয়েছি। আশা করছি এবারও বোরো ধানের ফলন ভালো হবে। দামটাও মনোপুত পাবো 


উপজেলার কোকতাড়া গ্রামের কৃষক আরাফাত হোসেন বলেন, আমি ছোট-খাটো কৃষক, আমার বেশি আবাদি জমি নাই। অল্প জমি লিজ নিয়েছি ওটায় আবাদ করেছি। শ্রমিক নিয়ে কাম করে নেয় না আমি নিজেই সব করি। বছরে ইরি আর আমন ধান লাগায়, তাতে আল্লাহ দিলে ভালোই আবাদ হয় তা দিয়ে ভালোই চলে।


হাকিমপুর উপজেলা কৃষি অফিসার ড. মমতাজ সুলতানা বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে এই উপজেলায় বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ হাজার ১০৫ হেক্টর জমি। ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রা পুরন হয়েছে, এখনও অনেক কৃষকরা ধান চাষে ব্যস্ত আছেন। আশা করছি ৮ হাজারের বেশি হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হবে। আমরা এই উপজেলায় সরকারিভাবে ৩ হাজার বোরো চাষিদের বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ করেছি।


তিনি আরো বলেন, হাইব্রিট জাতের ধানের বীজ ২ কেজি করে ২১০০ কৃষককে দিয়েছি। আর ৮৩০ জন কৃষককে উপসি জাতের ধান বীজ ৫ কেজি ও ১০ কেজি ডেপ, ১০ কেজি এমওপি সার দিয়েছি। আমরা প্রতিনিয়ত কৃষকদের পরামর্শসহ সেবা দিয়ে আসছি। আশা করছি আবহাওয়া ভালো থাকলে কৃষকেরা এবারও প্রচুর ফলন পাবেন।