বরিশালে উর্ধ্বমুখী বাজারে ক্রেতাদের ভরসা আলু!

নিজস্ব প্রতিবেদক
এইচ.এম.এ রাতুল, জেলা প্রতিনিধি, বরিশাল।
প্রকাশিত: শুক্রবার ২০শে মে ২০২২ ০৫:৪৯ অপরাহ্ন
বরিশালে উর্ধ্বমুখী বাজারে ক্রেতাদের ভরসা আলু!

নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যে একের পর এক ভেলকিতে কুপোকাত ক্রেতারা। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় নাভিশ্বাস উঠেছে বরিশালের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষের। বাজার করতে গিয়ে চোখে মুখে হতাশার ছাপ নিয়ে ফিরতে দেখা যাচ্ছে সবাইকে। ৪০ টাকার নিচে কোন সবজি না থাকা এবং তুলনামূলকভাবে আলুর দাম কিছুটা কম হওয়ায় ক্রেতাদের ভরসা এখন শুধুই আলু। অস্বাভাবিক হারে মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় চাহিদা অনুযায়ী পণ্য কিনতে পারছে না অনেকেই। বরিশালের বিভিন্ন এলাকার বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। 


বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরেই নিত্য প্রয়োজনীয় সকল পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে ৩৫ টাকার আটা এখন ৫০ টাকা, ৪৫ টাকার ময়দা এখন ৬৫ টাকা, ১০০ টাকার বড় রসুন এখন ১৫০ টাকার সরিষার তেল এখন ৩৬০ টাকা, ৩৫/৪০ টাকার দেশি রসুন এখন ৮০/৯০ টাকা, ৫৫ টাকার চিনি ৮০ টাকা, ৬০/৭০ টাকার মুসুর ডাল এখন ১১০টাকা, ৩৪০/৩৫০ টাকার আধা কেজির গুড়া দুধ এখন ৩৮০/৩৯০ টাকা, ৪৫/৫০ টাকার টুথপেস্ট ৮০/৮৫ টাকা, ১০০ টাকার রুহ-আফজা এখন ১৮০ টাকা, সকল ধরনের সাবান ১০ থেকে ১৫ টাকা, ডিটারজেন্ট  ২০ থেকে ২৬ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও সকল ধরনের চাল প্রকার ভেদে মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে বস্তা প্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। 


ব্যবসায়ীদের দাবী, আন্তর্জাতিক বাজারে সব কিছুর মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এর প্রভাব পড়ছে দেশের স্থানীয় সকল বাজারে। সকল জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে খাবার হোটেলগুলোতেও। প্রায় সব ধরণের খাবারেরই মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুণ। ফলে হোটেলে খেতে এসেও মূল্য বৃদ্ধির কারণে অনেকেই পড়ছেন দ্বিধা দ্বন্দ্বে।


একই অবস্থা নগরীর কাঁচা বাজারগুলোতে। টমেটোর দাম কেজিপ্রতি ৩০ টাকা বেড়ে এখন হয়েছে ৮০ টাকা। এছাড়া কাঁচা মরিচ ৪০ টাকা দাম বেড়ে হয়েছে ১০০ টাকা কেজি। বাজারে সজনে ৮০ টাকা, কচুমুখী ৮০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, পেঁপে ৬০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, মূলা ৫০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, ঢেঁডস ৪০ টাকা, ঝিঙ্গা ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, লাল আলু ৩০ টাকা, শসা ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মিষ্টি কুমড়া ৬০ টাকা, লাউ (মাঝারি) ৫০ টাকা, ফুলকপি ৫০ টাকা, বাধাকপি ৪০ টাকা এবং চাল কুমড়া ৪০ টাকা পিস হিসেবে এবং কাঁচা কলা ৪০ টাকা ও লেবু ২০ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে। যা পূর্বের তুলনায় অনেকটা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান ক্রেতারা। একমাত্র আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ীরা হাক-ডাক দিয়ে ৬/৭ কেজি আলু বিক্রি করছেন ১০০ টাকায়। দামে কম হওয়ায় অনেকেই ব্যাগ ভরে আলু কিনে নিয়ে যান।


নগরীর পাইকারী কাঁচা বাজারের আড়তদাররা জানান, আগের চেয়ে সব কিছুর খচর বেড়েছে, তাই মালের দাম এমনিতেই বেশি পরে যায়। তাছাড়া পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় এর প্রভাব পড়ছে সকল পণ্যের ওপর বলেন আড়তদাররা।


ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বরিশাল জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. শাহ্ শোয়াইব মিয়া জানান, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বিষয়ে বাজার তদারকিমূলক অভিযান নিয়মিত অব্যহত রয়েছে। যদি কেউ অযথা মূল্য বৃদ্ধি করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।