নতুন বইয়ের ছবিটি বিভিন্ন সময়ের মানুষের ছবি: শিক্ষামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার ২৭শে জানুয়ারী ২০২৩ ০৯:১০ অপরাহ্ন
নতুন বইয়ের ছবিটি বিভিন্ন সময়ের মানুষের ছবি: শিক্ষামন্ত্রী

মানুষের পূর্বপুরুষ বানর—নতুন পাঠ্যবইয়ের কোথাও এমনটি বলা নেই বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এ বিষয়ে গুজব ছড়িয়ে একটি গোষ্ঠী অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে চাঁদপুর প্রেস ক্লাবের পেছনে ডাকাতিয়ার পাড়ে ব্র্যাকের শিক্ষাতরী উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।


শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বইয়ে মানুষ আদিযুগে দেখতে কেমন ছিল, এখন কেমন সে বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। কোথাও বানর নেই। সেখানে একটি বানর বসিয়ে দিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।এসময় গুজবে কান না দিয়ে আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অথবা মোবাইলে এনসিটিবির ওয়েবসাইটে সবাইকে বই পড়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী।তিনি বলেন, ‘বইয়ে বলা হয়েছে বানর মানুষের পূর্বপুরুষ নয়। আর এ বিষয়ে গুজব ছড়িয়ে একটি গোষ্ঠী অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে।’


একটি শিক্ষাক্রম করতে বিশাল কর্মযজ্ঞ পরিচালিত হয় উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের শুধু মাধ্যমিকের ৬৫টি বই নতুন করতে হয়েছে। এ ৬৫টি বইয়ের একেবারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত, প্রতিটি অক্ষর আমরা সবাই যে সমানভাবে দেখেছি তা কিন্তু নয়। সেখানে যদি কোনো ভুল থেকে থাকে সে ভুলগুলো অনিচ্ছাকৃত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এবং যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে সেটি করে থাকেন তাহলে আমরা সেজন্য তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তারপরও এখন পর্যন্ত যে ভুলগুলো বেরিয়েছে তার মধ্যে বেশিরভাগই ১০ বছর আগের বইয়ের ভুল। আমি এখন খুবই খুশি সবাই বই পড়ছে। এতে কোনো বইয়ে আর ভুলত্রুটি থাকবে না।’


‘বইতে উল্লেখ করা হয়েছে একজন শিক্ষার্থী তার শিক্ষককে জিজ্ঞেস করছে মানুষ বানর থেকে হয়েছে কি না? তখন ওই শিক্ষক তাকে উত্তর দিয়েছেন, ‘না’। বানর বা শিম্পাঞ্জি মানুষের পূর্বপুরুষ এ কথাটিই ঠিক নয়। বইয়ে তিনবার এ বিষয়টি বলা হয়েছে। অথচ একটি গোষ্ঠী এ বিষয়টিকে নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমাদের বইয়ে যে ছবিটি আছে সে ছবিটিতে রয়েছে বিভিন্ন সময়ের মানুষ—আদিযুগে মানুষ দেখতে কেমন ছিল, এখন দেখতে কেমন। সেখানে একটি বানরের ছবি লাগিয়ে দিয়ে এ গুজব ছড়ানো হচ্ছে’, যোগ করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।


ব্র্যাকের শিক্ষাতরির বিষয়ে ডা. দীপু মনি বলেন, ‘বিজ্ঞান ও গণিত যে খুব মজার বিষয়, খুব আনন্দ নিয়ে তা শেখা যায়, কী পদ্ধতিতে শেখালে তা আনন্দময় হয়, তা না করলে খুব সহজ বিষয়ও কঠিন হয়ে দাঁড়াতে পারে; ব্র্যাক তার ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে অনেকগুলো তরিকে শিক্ষাতরিতে রূপান্তরিত করেছে। সেগুলো খুব সহজলভ্য উপাদান ব্যবহার করে, ছবির মাধ্যমে, অ্যানিমেশনের মাধ্যমে। একেবারে খেলতে খেলতে বিজ্ঞানের যত বিষয় আছে, অঙ্কের যত বিষয় আছে তা তুলে ধরছে। একই সঙ্গে মানবিকতার বিষয়টা, মূল্যবোধের বিষয়টা যাতে আমাদের শিক্ষার্থীদের ছোট বয়স থেকে শিখিয়ে দিতে পারি।’


তিনি বলেন, ‘আমাদের নতুন শিক্ষাক্রমের মূলকথাও কিন্তু তাই। কীভাবে করতে করতে শেখা যায়, আনন্দের সঙ্গে, মুখস্ত না করে। আমরা পরীক্ষার ভয়ে ভীত থাকবো না। মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ হবো। আমি বিশ্বাস করি যে আমাদের সরকারের নতুন শিক্ষাক্রমের এই যে প্রচেষ্টা ও ব্র্যাকের এই যে প্রয়াস, এটি একটি আরেকটির পরিপূরক। একটি অন্যটিকে এগিয়ে নিতে আরও সাহায্য করবে।’


এসময় উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইয়াসিন আরাফাত, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন পাটোয়ারী প্রমুখ।