‘লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, ধ্বনিতে মুখরিত পবিত্র আরাফাতের ময়দান

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২৭শে জুন ২০২৩ ০৩:১৮ অপরাহ্ন
‘লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, ধ্বনিতে মুখরিত পবিত্র আরাফাতের ময়দান

লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত পবিত্র আরাফাতের ময়দান। পবিত্র হজ আজ। ৯ জিলহজ  আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের দিনকেই হজের দিন বলা হয়। এ দিনের নাম ইয়াওমুল আরাফা। করোনা মহামারীর পপর সবচেয়ে বড় হজ এই বছর। সারা বিশ্বের  স্থানীয় সহ প্রায় ৩০ লাখ মানুষ এবার হজে অংশ নিচ্ছেন।


পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে মিনায় মুসল্লিদের জড়ো হওয়ার মধ্য দিয়ে। সোমবার (স্থানীয় সময় ৮ জিলহজ) সকাল থেকে মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও রবিবার রাতেই হাজিরা মিনার তাঁবুতে পৌঁছাতে শুরু করেন। হাজীরা ইসলামের পবিত্রতম স্থান কাবা শরিফ তাওয়াফ শেষে এশার নামাজের পর মক্কার নিজ নিজ আবাসন থেকে ইহরাম বেঁধে মক্কা থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরের মিনায় যাত্রা করেন। অন্যান্য দেশের হাজীদের সাথে বাংলাদেশের ১ লক্ষ ২২ হাজার ৮৮৪ জন হাজীও রওনা হন মিনার পথে।


মিনায় পৌঁছে হাজীরা ফজর থেকে শুরু করে এশা অর্থাৎ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন নিজ নিজ তাঁবুতে। মিনায় রাতে অবস্থান শেষে আজ মঙ্গলবার হাজীরা আরাফাত ময়দানে সমবেত হন। তবে গতকাল রাতেই অনেকে আরাফাতের ময়দানের দিকে রওনা হন। সেখানেই হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা হবে। এ ময়দানেই মানবতার মুক্তির দূত মহানবী হজরত মুহাম্মদ সা: বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন। এ বছর আরাফাতের ময়দানে হজের খুতবা দেয়ার জন্য শায়খ ড. ইউসুফ বিন মোহাম্মদ সাঈদকে নিযুক্ত করেছেন সৌদি বাদশাহ। একই সাথে মসজিদে নামিরাতে নামাজ পড়াবেন তিনি। হজের খুতবা বাংলায় অনুবাদ করছেন কক্সবাজার এর কৃতিত্ব সন্তান ড. আ, ফ, ম ওয়াহীদুর রহমান মক্কী ।


আরাফাতের দিনের ফজিলত ও তাৎপর্য অপরিসীম। এ দিনকে মুসলমানদের জন্য ঈদের দিন, আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত এবং গুনাহ থেকে পরিত্রাণের দিন হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে।


আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা হাজীদের জন্য ফরজ। আরাফাতের ময়দানে হাজীরা হাজির হয়ে আল্লাহর রহমত তালাশ করেন। সমবেত সবাই ইবাদত-বন্দেগি ও গুনাহ মাফের জন্য কান্নাকাটি করে আল্লাহর জিকির, দোয়া, মুনাজাতের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করে থাকেন। আর আল্লাহ তায়ালাও বান্দাদের ইবাদত-বন্দেগি ও কান্নাকাটির বিনিময়ে তাদের ক্ষমা ও জান্নাত লাভের ঘোষণা দেন।


ইসলামের বিধান অনুসারে, আজ সূর্যাস্তের পর আরাফাত থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে মুজদালিফায় গিয়ে রাতযাপন ও পাথর সংগ্রহ করবেন হাজীরা। ১০ জিলহজ ফজরের নামাজ আদায় করে মুজদালিফা থেকে আবার মিনায় ফিরবেন হাজীরা। মিনায় প্রত্যাবর্তনের পর হাজীদের পর্যায়ক্রমে চারটি কাজ সম্পন্ন করতে হয়। শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ, আল্লাহর উদ্দেশে পশু কোরবানি, মাথা মুণ্ডন করা এবং তাওয়াফে জিয়ারত। এরপর ১১ ও ১২ জিলহজ মিনায় অবস্থান করে প্রতিদিন তিনটি শয়তানকে প্রতীকী পাথর নিক্ষেপ করবেন হাজীরা। সবশেষে কাবা শরিফকে বিদায়ী তাওয়াফের মধ্য দিয়ে শেষ হবে হজের আনুষ্ঠানিকতা।