বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের (বিসিসি) পঞ্চম পরিষদের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন নবনির্বাচিত মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ (খোকন সেরনিয়াবাত)। বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মো. শওকত আলীর উপস্থিতিতে নগর ভবনে আজ মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় তাঁকে দায়িত্বভার হস্তান্তর করেন বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাসুমা আক্তার। এ সময় বরিশাল সদর আসনের সাংসদ ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুম শামীম, কাউন্সিলরবৃন্দ এবং মেয়রপতœী লুনা আব্দুল্লাহ, ছেলে আবিদুর সেরনিয়াবাত উপস্থিত ছিলেন। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাসুমা আক্তার।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১ টায় নগর ভবন চত্ত্বরে নবনির্বাচিত মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ ও নির্বাচিত কাউন্সিলরদের অভিষেক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো. শওকত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম এমপি, হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ আসনের সাংসদ পঙ্কজ নাথ, বানারীপাড়া-উজিরপুর আসনের সাংসদ শাহে আলম আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হাফিজ মল্লিক, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য রুবিনা মীরা, মেয়রপতœী লুনা আব্দুল্লাহ, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সচিব মাসুমা আক্তার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস, জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম, বরিশাল মহানগর পুলিশের কমিশনার সাইফুল ইসলাম, ৩০টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরসহ প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক, সামাজিক সাংস্কৃতিক ও শিক্ষক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অভিষেক অনুষ্ঠানে মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ বরিশালবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, নগর ভবনের প্রশাসনিক কাঠামো নেই বললেই চলে। সিটি কর্পোরেশনে আমি মাত্র ১২ কোটি টাকা পেয়েছি। আর বরিশালবাসী ৩০০ কোটি টাকা ঋণী।
মেয়র বলেন, সকলের সহযোগিতায় আমি নতুন বরিশাল গড়তে চাই। আমি প্রতিহিংসায় বিশ্বাস করি না। সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা জনসেবায় সকল স্বার্থের ঊর্ধ্বে থেকে কাজ করবেন। প্রশাসনিক অবকাঠামো ভেঙে পড়লেও তা নিয়ে চিন্তা করবেন না, সব হবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনী ইশতেহারে আমি যে ৩৫টি কার্যক্রম বাস্তবাযনের ঘোষণা দিয়েছি, তা অচিরে বাস্তবায়ন করব। প্রধানমন্ত্রী বরিশালের উন্নয়নে যে বরাদ্দ দিয়েছেন তা সঠিকভাবে বরিশালের উন্নয়নে ব্যয় করা হবে। এ জন্য সকলকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি বরিশালকে একটি স্মার্ট নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্যে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম এমপি বলেন, আমরা চাই বরিশালের উন্নয়ন হোক। বিগত বছরগুলোতে বরিশাল ছিল অবহেলিত। তাই বরিশাল সিটি কপোরেশনের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী ৭৯৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী চান বরিশালের উন্নয়ন হোক। অন্যসব সিটি কপোরেশনের চেয়ে বরিশাল এগিয়ে যাবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। এ সময় তিনি নতুন মেয়রের সঙ্গে থেকে বরিশালের উন্নয়নে পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
এদিকে অভিষেক অনুষ্ঠানে নতুন মেয়রের আগমনে সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা-কর্মচারী, জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীদের পদচারণায় মুখরিত ছিল নগর ভবন ও তার আশপাশের এলাকা। শুরুতে লালগালিচা সংবর্ধনার পাশাপাশি ফুলেল শুভেচ্ছাও জানান তারা। দায়িত্বগ্রহণের আগে ফজলুল হক অ্যাভিনিউতে অনুষ্ঠিত অভিষেক অনুষ্ঠানে দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণও মানুষেরও উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
দলীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, সাবেক মেয়র প্রয়াত শওকত হোসেনের পর খোকন সেরনিয়াবাতকে নিয়ে বরিশালবাসীর প্রত্যাশা অনেক। যার প্রতিফলন ঘটেছে অভিষেক অনুষ্ঠানে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি। তবে অভিষেক অনুষ্ঠানে সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ কিংবা তার পরিবার ও অনুসারীদের কাউকে দেখা যায়নি।
উল্লেখ, গত ১২ জুন বরিশাল সিটি করপোরেশনে ভোট হয়। এতে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ৫৩ হাজার ৯৮০ ভোটের ব্যবধানে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী সৈয়দ ফয়জুল করিমকে পরাজিত করেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।