মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে একটি গবাদিপশুর খামারে বিষ প্রয়োগে ৮টি গরুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) রাতে শ্রীমঙ্গল উপজেলার ৬ নং আশিদ্রোন ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম রামনগর এলাকায় সুলেমান মিয়ার খামারে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। গবাদিপশুর খাদ্যে বিষ মিশিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে খামারের মালিকের পরিবারের বিরুদ্ধে।
খামারের মালিক সুলেমান মিয়া জানান, বৃহস্পতিবার ভোর রাতে তার খামারের গরুগুলো একে একে অসুস্থ হতে থাকে। প্রথমে দুটি গরু মারা যায়, এরপর সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত আরও ৬টি গরু ছটফট করতে করতে মারা যায়। সুলেমান আরও জানান, তিনি এই ঘটনার জন্য স্থানীয় সবজি ব্যবসায়ী রমজান মিয়াকে দায়ী করছেন, যাঁর সঙ্গে তাঁর পরিবারের মধ্যে বিবাহ ও ছাগল সংক্রান্ত বিরোধ চলছে। সুলেমান বলেন, রমজান মিয়া তাঁদের খামারে বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে ক্ষতি করার হুমকি দিয়েছিলেন, আর তার প্রতিশোধস্বরূপ এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে ধারণা করছেন তিনি।
এ ঘটনার পর, সুলেমান মিয়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস এবং থানায় অবহিত করেন। প্রাণি সম্পদ অফিসের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান এবং স্যাম্পল সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু করেন। শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সাবিনা ইয়াসমিন জানিয়েছেন, তদন্তের জন্য ব্লাড স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়েছে এবং পরীক্ষার ফলাফল হাতে আসলে প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তবে, এতে প্রায় দুই মাস সময় লাগতে পারে।
এই ঘটনায় সুলেমান মিয়া এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা গভীরভাবে ভেঙে পড়েছেন। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৬-৭ লাখ টাকা বলে জানান সুলেমান। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “যারা এই অবলা প্রাণিগুলোকে এভাবে হত্যা করেছে, আমরা আল্লাহর কাছে তাদের বিচার চাই।”
প্রতিবেশীরা এবং স্থানীয়রা খামারের ক্ষতির খবর শুনে দেখতে আসেন। খামারের পরিচর্যাকারী শুক্কুর মিয়া জানান, অন্যদিনের মতো গরুগুলোকে স্বাভাবিক খাবার দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু সকালে ওঠার পর দুইটি গরু মৃত অবস্থায় পড়ে ছিল এবং পরে একে একে আরও গরু মারা যায়।
কৃষক সুলেমান জানান, গত চার বছর ধরে তিনি খামারে দেশীয় গরু পালন করে আসছিলেন এবং এই খামার ও কৃষিকাজের আয় দিয়ে তাঁর পরিবার চালাতেন। গরুর মৃত্যুর কারণে এখন তাঁর পরিবার কিভাবে চলবে, তা নিয়ে চিন্তিত। তিনি সরকারের কাছে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।