মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলা এবং সিলেট জেলার বালাগঞ্জ উপজেলার মাঝখান দিয়ে বহমান কুশিয়ারা নদী। এ নদীর ওপর একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিন ধরে জানিয়ে আসছেন দুই উপজেলার সাধারণ মানুষ। তবে প্রতি সরকারের সময় এ দাবি পূরণের জন্য আশ্বাস দিলেও বাস্তবতা কখনোই পরিবর্তিত হয়নি। দীর্ঘ সময় ধরে দুই জেলার মানুষের যাতায়াতের জন্য এই নদীটি পাড়ি দিতে হচ্ছিল নৌকায়, যা ছিল তাদের জন্য জীবন বিপদ সংকুল।
২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি সরকার এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের উদ্যোগে কুশিয়ারা নদীতে ব্রিজ নির্মাণের বিষয়ে একটি পদক্ষেপ নেয়া হয়। কিন্তু রাজনগরের সঙ্গে সিলেটের যোগাযোগের এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা শুরু হওয়ার আগেই সরকার বদলে যায় এবং পরবর্তী সময়ে আর কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে আবারো কুশিয়ারা নদীতে ব্রিজ নির্মাণের দাবি জোরালো হয়, কিন্তু তখনও এটি বাস্তবায়ন হয়নি।
২০২৩ সালে সরকারের পক্ষ থেকে কুশিয়ারা নদীতে ফেরিঘাট স্থাপনের অনুমোদন দেওয়া হয়। গত ২৪ জানুয়ারি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে ফেরিঘাট স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করা হয়। তবে দুই বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও কোনো কার্যক্রম শুরু হয়নি এবং ফেরিঘাট স্থাপনের কাজ লাল ফিতায় আটকে রয়েছে।
এ বিষয়ে রাজনগর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মাহফুজ হামিদ বলেন, “আমরা বহু বছর ধরে ব্রিজ বা ফেরি নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছি। ফেরিঘাট স্থাপনের অনুমোদন পেয়ে কিছুটা আশার আলো দেখেছিলাম, কিন্তু তা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি।”
এছাড়া, সমাজকর্মী এম খসরু চৌধুরী বলেন, “বালাগঞ্জ ও রাজনগরের মধ্যবর্তী কুশিয়ারা নদীর কারণে আমাদের যাতায়াতের সমস্যা চরমে পৌঁছেছে। আমাদের অনেক শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হয়ে যাতায়াত করে।”
রাজনগর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কায়সার হামিদ জানিয়েছেন, “সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা ফেরিঘাট স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছিলাম, কিন্তু বালাগঞ্জ অংশে ভূমির অভাবের কারণে কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। আমরা বিষয়টি পুনরায় উদ্যোগ নিয়ে সিলেট জেলা প্রশাসন ও বালাগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করব।”
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।