প্রকাশ: ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:৪৩
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
সাধারণত এপ্রিল ও মে মাসেই দেশের মানুষ প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ হয়। সে সময় তাপমাত্রা প্রায় প্রতিদিনই ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে থাকে। কিন্তু এবার সেপ্টেম্বর মাসে তুলনামূলক কম তাপমাত্রার মধ্যেও ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে। চলতি মাসের শুরুতে তাপমাত্রা ৩৩ থেকে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলেও জনজীবন বিপর্যস্ত করে তুলেছে তীব্র গরম।
শুক্রবার রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গরম পরিস্থিতি আরও প্রকট হয়। মানুষ হাঁসফাঁস করছে, ঘামে ভিজে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এমন প্রশ্ন উঠেছে, কম তাপমাত্রার মধ্যেও কেন এত গরম অনুভূত হচ্ছে। আবহাওয়াবিদদের মতে এর মূল কারণ বাতাসে অতিরিক্ত আর্দ্রতা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমান জানান, এপ্রিল ও মে মাসে তাপমাত্রা অনেক বেশি হলেও বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ থাকে তুলনামূলক কম। ফলে তখন গরমে অস্বস্তি হলেও শরীর থেকে ঘাম ঝরার পরিমাণ এতটা থাকে না। কিন্তু এখন আর্দ্রতার আধিক্য থাকায় সামান্য তাপমাত্রায়ও মানুষ ভীষণ গরম অনুভব করছে। শুক্রবার সকালে ঢাকায় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৯ শতাংশ।
গরমের পেছনে আরেকটি বড় কারণ হলো বৃষ্টির পরিমাণ কমে যাওয়া। গত তিন দিন ধরে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি নেই বললেই চলে। মাঝে মধ্যে সামান্য বৃষ্টি হলেও তাতে স্বস্তি মিলছে না। গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেও গরম কমেনি।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, সাম্প্রতিক লঘুচাপের প্রভাব বাংলাদেশে পড়েনি। বরং বৃষ্টি না হওয়ায় গরম আরও বেড়েছে। একই সঙ্গে মৌসুমি বায়ুও এখন কম সক্রিয়, এর প্রভাবেও দেশে বৃষ্টি কমে গেছে। ফলে তাপমাত্রা তুলনামূলক কম হলেও ভ্যাপসা গরমে অস্বস্তি বাড়ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ পর্যবেক্ষণ বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের ৫১টি আবহাওয়া স্টেশনের মধ্যে ২৫টিতেই কোনো বৃষ্টি হয়নি। বান্দরবানে সামান্য ১৬ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড হলেও তাতে গরম প্রশমিত হয়নি। রংপুর, ময়মনসিংহ ও রাজশাহী বিভাগের অধিকাংশ এলাকাও ছিল বৃষ্টিহীন।
এদিকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু জায়গায় এবং ঢাকাসহ অন্যান্য বিভাগে দু-এক স্থানে হালকা বৃষ্টি হতে পারে। তবে এই বৃষ্টি গরম থেকে তাৎক্ষণিক স্বস্তি দেবে কি না তা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা।
সেপ্টেম্বরের এমন ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। বিশেষ করে কর্মজীবী মানুষ দিনের বেলা বাইরে বের হলে পড়ছে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে। তীব্র গরমে বিদ্যুৎ বিভ্রাট যুক্ত হলে তা মানুষের কষ্টকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।