শ্রমিক সংকটে খেতেই পচে যাচ্ছে স্বপ্নের ধান

নিজস্ব প্রতিবেদক
ফুয়াদ হাসান রঞ্জু, উপজেলা প্রতিনিধি, ভূঞাপুর, টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: শুক্রবার ১৩ই মে ২০২২ ০৯:২০ অপরাহ্ন
শ্রমিক সংকটে খেতেই পচে যাচ্ছে স্বপ্নের ধান

ভূঞাপুরে বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে কৃষকের স্বপ্নের ধান।এছাড়া শ্রমিক সংকট থাকার কারনে ধান কাটার জন্য শ্রমিকও মিলছে না।"অশনি" ঝড়ে বসতবাড়ির কোন ক্ষয়ক্ষতি না হলেও প্রভাব পড়েছে অর্থকারী ফসল বোরো ধানে। দুইদিনের টানা বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চলে চাষাবাদ করা ধান তলিয়ে গেছে। এতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কৃষকরা। এছাড়া ধান কাটার শ্রমিক না পাওয়ায় তলিয়ে থাকা ধান খেতেই পচে নষ্ট হচ্ছে। তবে কৃষি বিভাগের দাবী, পূর্বে থেকে ধান কাটা শুরু হওয়ায় জেলায় অশনির বৃষ্টিতে তেমন প্রভাব পড়েনি। ফলে নষ্ট হয়নি কৃষকের বোরো ধান।


জেলার ভূঞাপুর উপজেলার কয়েড়া গ্রামের বাদশা মিয়া (৫৫)। খেতে তলিয়ে যাওয়া ধান কাঁচি দিয়ে টেনে টেনে তুলে কাটছেন আর আক্ষেপ করছেন, ঈদের আগেই যদি ধানগুলো কাটা হত তাহলে হয়ত ক্ষতির মুখে পড়তেন না। সুবিধা সময় মত কাটতে গিয়ে “অশনির” ঝড়ো হওয়া আর বৃষ্টিতে তার জমির ধান তলিয়ে গেছে। ধান কাটার শ্রমিক সংকটে দ্রুত ধানও কাটতে পারছেন না। ফলে একাই জমির ধান কাটছেন তিনি। তারপরও শঙ্কায় রয়েছেন বৈরী আবহাওয়ায় ধান শুকানো নিয়ে। তার মত আরো অনেক কৃষকের জমির ধানই বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে।


জানা গেছে, জেলায় এ বছর বোরো ধানের আবাদ ভাল হলেও শুরু হওয়া ঝড় “অশনি’র ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চলের উপজেলাগুলোতে ধানের ক্ষতি হয়েছে। টানা বৃষ্টি হওয়ায় খেতে পানি জমে ধান তলিয়ে গেছে। এছাড়া ধান কাটতে শ্রমিক প্রতি গুনতে হচ্ছে ৯০০-১ হাজার টাকা। আর বাজারে ধানের দাম রয়েছে ৭-৮শ টাকা মন। ফলে এক মন ধানের বিনিময়ে শ্রমিক পাচ্ছে না কৃষকরা। এদিকে বৃষ্টির পানিতে ধান তলিয়ে যাওয়ায় শ্রমিকরাও পানিতে নেমে ধান কাটতে চায় না।


কয়েড়া গ্রামের কৃষক বাদশা মিয়া বলেন, গেল রোজার শেষের দিকে জমির ধান পেকেছিল। ধান কাটবো কাটবো করে আর কাটা হয়নি। এরমধ্যে টানা বৃষ্টি শুরু হয়ে খেতে হাটু পানি জমে গিয়ে ধান তলিয়ে গেছে। দ্রুত যে ধান কাটবে সে উপায় নেই কারণ শ্রমিক পাওয়া যায় না। আবার শ্রমিক পেলেও পানিতে নেমে ধান কাটতে চায় না। বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।


কৃষক আবুল কাশেম বলেন, যেটুকু ধান পাওয়া যায় কেটে। না হলে জমিতেই পচে যাবে পানিতে। ধান বেশি হবে না তারপরও যা পাওয়া যায় তাই খাবারের জন্য রেখে দিবো। সরকারিভাবে যদি কোন সহায়তা পাওয়া যেত তাহলে ক্ষতিটা কিছুটা পুষিয়ে যেত।


ভূঞাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবীর বলেন, উপজেলায় ইতোমধ্যে ৪৫ শতাংশ জমির ধান কর্তন করা হয়েছে। বাকি ধান কাটার অপেক্ষায় ছিল। তবে দুইদিনের বৃষ্টি আর অশনির প্রভাবে কিছু ধান শুয়ে পড়েছে। কিন্তু ধানের কোন ক্ষতি হয়নি। তারপরও ধান কাটা অব্যাহত হয়েছে। আবহাওয়া উন্নত হওয়ার পাশাপাশি কৃষকরা বৃষ্টি অপেক্ষা করে ধান কাটতে পারে তাহলে আগামী ১০-১২দিনের মধ্যে ধান কাটা শেষ হবে।