প্রকাশ: ৬ জানুয়ারি ২০২২, ২২:৫৮
পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে রাজশাহীর বাগমারায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের শোচনীয় পরাজয় হয়েছে। উপজেলার ১৬টি ইউপির মধ্যে ১১টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা হেরেছেন। স্থানীয়ভাবে দলের দুর্বল নেতৃত্বের কারণেই ফলাফলে এমন বিপর্যয় হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় প্রবীণ নেতারা।
গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফলে পাঁচটিতে নৌকার প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। বিজয়ী প্রার্থীরা হলেন শ্রীপুর ইউপিতে মকবুল হোসেন মৃধা, বাসুপাড়ায় লুৎফর রহমান, নরদাশে গোলাম সারওয়ার, গোয়ালকান্দিতে আলমগীর হোসেন সরকার ও সোনাডাঙ্গায় আজাহারুল হক। এ ছাড়া বাকি ১১ ইউপির মধ্যে ৬টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও ৫টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিএনপির ৫ নেতা নির্বাচিত হয়েছেন।
এর মধ্যে রাজশাহী-৪ আসনের সাংসদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এনামুল হকের এলাকা মাড়িয়া ইউপির নৌকার প্রার্থী আসলাম আলী পরাজিত হয়েছেন। ভোটের ব্যবধানে তিনি তৃতীয় হয়েছেন। এখানে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী সাংসদের ছোট ভাই রেজাউল হক বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
দলের এমন ভরাডুবির বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সাবেক সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা বীরেন্দ্রনাথ সরকার প্রথম আলোকে বলেন, এই ফলাফল দলের জন্য শুভ নয়। স্থানীয় নেতারা প্রার্থী মনোনয়নে অনিয়ম করেছেন এবং দলের বিদ্রোহীদের নিয়ে বসার কোনো উদ্যোগ নেননি। ফলে বিদ্রোহী প্রার্থীরাই শেষ পর্যন্ত বিজয়ী হয়েছেন।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে থাকা চারজন নেতা বলেন, দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা সরাসরি আবার কৌশলে নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তাঁরা বিদ্রোহী অথবা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে ভোট চেয়েছেন।
হামিরকুৎসা ইউপিতে নৌকার পরাজিত প্রার্থী সানোয়ারা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনে দলীয় কোনো নেতাকে তিনি পাশে পাননি। দলের নেতা-কর্মীরা সরাসরি দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়ে প্রচারণা চালিয়েছেন। দলীয় নেতাদের সহযোগিতা চেয়েও পাওয়া যায়নি। দলের নেতারাই তাঁর পরাজয়ের জন্য দায়ী বলে দাবি করেন তিনি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বলেন, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ, নিরপেক্ষ ও সংঘাতমুক্ত নির্বাচন উপহার দেওয়া ছিল বড় সার্থকতা। বিজয়ের সংখ্যার ওপর সার্থকতা নির্ভর করে না। মনোনয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রার্থী মনোনয়নে কিছুটা ত্রুটি ছিল। তবে প্রার্থীদের নিজস্ব অযোগ্যতা ও তাঁদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না থাকায় নৌকার প্রার্থীদের পরাজয় হয়েছে।