প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২২, ২২:৩৮
নওগাঁর বদলগাছি উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ রানার বিরুদ্ধে একই ইউনিয়নে কর্মরত এক নারী উদ্যোক্তাকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই ভুক্তভোগী নারী উদ্যোক্তা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এবং অভিযোগের অনুলিপি স্থানীয় সরকার বিভাগের উপরিচালক এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরও দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চেয়ারম্যান মাসুদ রানা গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পূর্ব থেকে ওই নারী উদ্যোক্তাকে বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি করে আসতেছেন। তিনি মুঠোফোনে এবং বেশকিছু চিঠির মাধ্যমে দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্নপ্রকার কুপ্রস্তাব দিতেন। যার যাবতীয় প্রমান সংরক্ষিত আছে। তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন কেড়ে নেন এবং তিনি তার কিছু গোপন তথ্য ডিলিট করে দেন। পরবর্তীতে লোক মারফত মোবাইল ফোনটি তিনি ফেরত দেন।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, কিছুদিন আগে গনটিকা চলাকালীন সময়ে আমার কাছে দুই লক্ষ টাকা চাঁদা হিসেবে দাবী করেন। আমি সেই চাঁদার টাকা দিতে না পারায় তিনি আমাকে আমার সকল কাজে বাধা সৃষ্টি করেন এবং ডিজিটাল সেন্টারের সকল সেবা সচিব এবং হিসাব সহকারীকে প্রদানের জন্য নির্দেশ দেন। আমি একজন বিবাহিত নারী এবং আমার দুটি জমজ কন্যা সন্তান আছে। বর্তমানে চেয়ারম্যানের এমন কু-প্রস্তাবের ফলে আমার কর্মক্ষেত্রে যেমন অসুবিধা হচ্ছে ঠিক একই ভাবে সাংসারিক কলহের সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে আমার বিবাহ বিচ্ছেদও ঘটেছে। এমতাবস্থায় আমার ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে কাজ এবং সামাজিক চলাচলে বিষদ বাধার সৃষ্টি হয়েছে, যার পরিমান দিন-দিন বৃদ্ধি পাইতেছে এবং প্রতিনিয়ত আমার সম্মানহানি ঘটছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন ওই নারী।
ভুক্তভোগি ওই নারী উদ্যোক্তা বলেন, আমি জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপরিচালক এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি গত ১৩তারিখে। এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। হয়তো তদন্ত কাজ চলছে। আমি আশা করছি আমার অভিযোগের সঠিক বিচার পাবো। আমি যেভাবে হয়রানির শিকার হয়েছে। এমনটা যেন আর কারো সাথে না ঘটে সেই কামনা করছি। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানাচ্ছি।
বিষয়টি কথা হলে অভিযুক্ত মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ রানা মুঠোফোনে বলেন, কেমন আছেন,কোথায় আছেন। মোবইলে এসব কথা বলা যাবেনা। আমি সাক্ষাতে সরাসরি কথা বলতে চাই। তবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই আমার সাথে মনোমালিন্য আছে। তবে কি নিয়ে মনোমালিন্য এ বিষয়ে কোনো সদোত্তোর না দিয়ে ফোনের সংযোগ কেটে দেন তিনি।
জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান বলেন, বদলগাছি উপজেলার মথুরাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ রানার বিরুদ্ধে একই ইউনিয়নে কর্মরত এক নারী উদ্যোক্তাকে যৌন হয়রানির অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।