মাদারীপুরে জমিজমার বিরোধের জেরে কৃষককে কুপিয়ে জখম

মাদারীপুরে জমিজমার বিরোধ এবং পূর্ব শত্রুতার জেরে দুলাল চৌকিদার (৫০) নামের এক কৃষককে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মুজাম সরদার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার বিকেলে সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের চরব্রাক্ষন্দী এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। আহত দুলাল চৌকিদার চরব্রাক্ষন্দী এলাকার মৃত দলিলউদ্দিন চৌকিদারের ছেলে। ঘটনার পর স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন আছেন।

দুলাল চৌকিদারের স্ত্রী মাহিনুর বেগম শনিবার সকালে মাদারীপুর সদর থানায় সাতজনের নাম উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তদের মধ্যে আছেন গনি সরদারের ছেলে মুজাম সরদার (৫৫), আলাউদ্দিন বেপারীর ছেলে নাহিদ হোসেন (২৫), মন্নান সরদারের ছেলে কিবরিয়া সরদার (৩৫), সরোয়ার সরদার (৩৪), আজিম সরদারের ছেলে রুহুল সরদার (২২), রশিদ সরদারের ছেলে মিজান সরদার (৫০) এবং কাওসার সরদারসহ আরও কয়েকজন। 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে মাদারীপুর সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের চরব্রাহ্মন্দী এলাকায় দুলাল চৌকিদার ও মুজাম সরদারের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এই বিরোধের জেরে শুক্রবার বিকেলে মুজাম সরদারের লোকজন দুলাল চৌকিদারকে জমি থেকে কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে অতর্কিত হামলা চালিয়ে হাত-পায়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। 

আহত দুলাল চৌকিদার বলেন, "আমাদের পরিবারের সঙ্গে মুজাম সরদারের জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল। বিভিন্ন সময়ে সালিশের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হলেও কোনো ফলাফল আসেনি। কিন্তু তাদের লোকজন আমার উপর রাম দা দিয়ে হামলা চালিয়ে আমাকে জখম করেছে। এখন আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি সরকারের কাছে এর সঠিক বিচার চাই।"

আহতের স্ত্রী মাহিনুর বেগম বলেন, "আমাদের একটাই চাওয়া—আমাদের ওপর যারা হামলা করেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার হোক। আমরা আর কোনো নির্যাতনের শিকার হতে চাই না।"

দুলাল চৌকিদারের নাতি বিল্লাল চৌকিদার বলেন, "জমি নিয়ে বিরোধ থাকতে পারে, কিন্তু একজন বৃদ্ধ মানুষকে এভাবে কুপিয়ে জখম করা কোনোভাবেই মানা যায় না। আমরা অভিযুক্তদের শাস্তি চাই।"

এ ঘটনায় অভিযুক্ত মুজাম সরদারের বাড়িতে যোগাযোগ করা হলেও তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, "তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না, এবং আইন অনুযায়ী দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।"

এই ঘটনার পর থেকে এলাকাবাসীর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থায় রয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।