সরাইলে জাল দলিল ব্যবহার করে জমির নামজারি করার অভিযোগে এক যুবককে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল বুধবার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন বেগম এই দণ্ড প্রদান করেন।এর সত্যতা নিশ্চিত করে সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)মো. মোশারফ হোসাইন।
গ্রেফতার হয়েছেন- সরাইল সদর ইউনিয়ন নতুন হাবলী গ্রামের মো. রাকিবুল ইসলাম ঠাকুর, শামসুল আলম ঠাকুরের ছেলে।জানা যায়,বুধবার জাল দলিলের বিষয়ে আনিত অভিযোগের সত্যতা পান সরাইল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে পুলিশকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। ভূমি অফিসূত্রে জানা যায়, ৪৯নং- সরাইল মৌজার নামজারি ও জমাখারিজ মোকদ্দমা নং-২১৯১-২৬ এর আদেশ মুলে সৃজিত ২৫-১৩৪৪৮নং নামজারি খতিয়ান সৃজিত হয়।
নামজারি ও জমাখারিজ নং-২১৯১/২৫-২৬এর মুল নথি পর্যালোচনায় দেখা যায় যে,আবেদনকারী মো. রাকিবুল ইসলাম ঠাকুর, পিতা মো. শামসুল আলম ঠাকুর সরাইল সাব-রেজিস্টার, অফিস এর বিগত ১৮/৬/২০০২ তারিখের ২৪০৬ নং- সাফকবলা দলিল দাখিল করেন,উক্ত দলিল পর্যালোচনায় দেখা যায়, ৪৯ নং-সরাইল মৌজার ৫৭৪৮ নং- বি,এস খতিয়ানের রেকতীয় মালিক শফিকুল ইসলাম গং এর নিকট থেকে বি,এস ৫৬০০ দাগে ০,১৭ একর, বি,এস ৫৬০১ দাগে ০,১০।
একর এবং বি,এস ৫৭০১ দাগে০,৩০ একর নাল ভূমির মালিকানা হাসিল করেন। পরবর্তীতে আবেদনকারী মো. রাকিবুল ইসলাম ঠাকুর, পিতা মো. শামসুল আলম ঠাকুর এর দাখিলকৃত সরাইল সাব- রেজিস্ট্রার অফিস এর বিগত ১৮/৬/২০০২ তারিখের ২৪০৬ নং- সাফকবলা দলিল প্রকৃতপক্ষে জাল প্রমাণিত হওয়ায়। উক্ত ৪৯ নং- সরাইল মৌজার নামজারীর ও জমাখারিজ মোকাদ্দমা নং- ২১৯১/২৫-২৬ এর আদেশ মুলে সৃজিত ২৫- ১৩৪৪৮নং- নামজারি খতিয়ান বাতিল করে উক্ত ২৫-১৩৪৪৮নং- নামজারি খতিয়ান এর বি,এস - ৫৬০০ দাগে ০,১৭ একর,বিএস,৫৬০১ দাগে০,১০ একর এবং বি,এস ৫৭০১ দাগে০,৩০একর নাল ভূমি পূর্বের মূল খতিয়ানে পূর্ণ: বহাল করার আদেশ প্রদান করা হয়েছে।
এই বিষয়ে সরাইল উপজেলা সাব -রেজিস্ট্রার মো. হেনায়েত উদ্দিন বলেন, সাধারণত ব্যক্তির নামে খাজনা এবং নামজারি দেখে দলিল সম্পাদন করা হয়েছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শারমিন বেগম বলেন, জাল দলিলের বিষয়টি আমাদের কাছে ধরা পড়ে। জালিয়াতির অপরাধে মো.রাকিবুল ইসলাম ঠাকুরকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও প্রতারণার অপরাধে মামলা রুজু করা হয়েছে। এসিল্যান্ড বলেন, এই প্রতারণার অপরাধে দলিল লেখক আবু বক্করকে আইনের আওতায় আনা হবে।
দলিল লেখক আবু বকরের সঙ্গে মোবাইল নাম্বারে(০১৭৪...১৭২৫) একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও এই বিষয়ে কোন প্রকার বক্তব্য দেননি তিনি। সরাইল থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোরশেদুল আলম চৌধুরী বলেন, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেওয়ার পর আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে রয়েছেন।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)মো. মোশারফ হোসাইন বলেন,এই ঘটনা প্রমাণ করে যে জাল দলিলের মাধ্যমে নামজারি করার প্রচেষ্টা মারাত্মক অপরাধ এবং এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এই অপরাধের সাথে জড়িত অনেকের নাম সে বলেছে। তাদের সকলকে আইনের আওতায় আনা হবে।