প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৫, ২১:৪৪
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার করমদি মাঠপাড়ায় বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আটটি বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তার টাঙানো হয়েছে কোনো প্রকার অনুমতি ছাড়াই। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় দালাল চক্র ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে নিয়মবহির্ভূত এই কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে, অথচ দায়ভার নিচ্ছে না কেউই। এতে বিপাকে পড়েছে প্রকৃত সেচসংযোগ প্রত্যাশীরা।
স্থানীয় বাসিন্দা সাহাদুল ইসলাম ও মিলন হোসেন জানান, তারা মটরের লাইনের জন্য দালালদের মাধ্যমে যথাক্রমে ২ লাখ ও ৪ লাখ টাকা দিয়েছেন। কাজ শুরু হয়েছে তিন মাস আগে, খুঁটি স্থাপন ও তার টাঙানো হয়েছে, কিন্তু এখনো পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে কোনো টাকা জমা পড়েনি। তারা জানিয়েছেন, সবকিছুই দালালের মাধ্যমে হয়েছে এবং কাজের অনুমতির কথা বলা হলেও আদতে তা ছিল না।
দালালদের মধ্যে ইসলামপুর গ্রামের ইমারুল ও দেবিপুর গ্রামের খোকনের নাম উঠে এসেছে। অভিযোগের তীর ঠিকাদার মোজাম্মেল হোসেনের দিকেও। কিন্তু একে অপরকে দোষারোপ করে কেউই দায় স্বীকার করছে না। ইমারুল বলেন, কাজটি খোকনের, আবার খোকনের দাবি, কাজটি করেছে ইমারুল ও মোজাম্মেল। মোজাম্মেল জানান, তিনি বর্তমানে খুলনায় আছেন এবং বিষয়টি মনে নেই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, খুঁটি ও তার বসানোর কাজ শেষ হলেও, পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে কোনো কাগজপত্র বা অর্থ জমা নেই। এমন প্রশ্ন উঠেছে, অনুমোদন ছাড়া এত বড় কাজ কীভাবে সম্ভব হলো। অনুসন্ধানে জানা যায়, বামন্দী সাবজোনাল অফিস থেকে শুরু করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিভিন্ন স্তরে দালাল চক্রের মাধ্যমে দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের বিস্তৃত চিত্র বিদ্যমান।
বামন্দী সাবজোনাল অফিসের এজিএম সৌমিক নাসের জানান, কাজটির কোনো অনুমতি ছিল না, নিয়ম অনুযায়ী টাকা জমা দিয়ে ঠিকাদার নির্বাচনের কথা, কিন্তু এখানে কিছুই অনুসরণ করা হয়নি। মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার স্বদেশ কুমার ঘোষ জানিয়েছেন, তদন্ত চলছে, চূড়ান্ত প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত মন্তব্য করা যাবে না।
এই অনিয়মের ঘটনায় গ্রামবাসী ও সেচসংযোগ প্রত্যাশীরা উদ্বিগ্ন। তারা দাবি করছেন, তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের শনাক্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হোক যাতে আর কেউ এমন হয়রানির শিকার না হয়।