ইন্দুরকানীতে ইউপি সদস্য ও ভাবিকে কুপিয়ে হত্যা: স্ত্রী গুরুতর আহত

পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলায় পারিবারিক বিরোধের জেরে এক ইউপি সদস্য ও তার ভাবিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার রাত ১২টার দিকে চন্ডিপুর ইউনিয়নের চরবলেশ্বর এলাকায় এ নৃশংস ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. শহিদুল ইসলাম হাওলাদার (৫০) এবং তার ভাবি মৌকলি বেগম (৪৮)। আহত হয়েছেন শহিদুলের স্ত্রী রেহেনা বেগম (৪০), যিনি বর্তমানে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাতে শহিদুলের বাড়িতে হঠাৎ চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসেন। তারা দেখেন, শহিদুল ও তার ভাবিকে পুকুরপাড়ে কুপিয়ে ফেলে রাখা হয়েছে। তার স্ত্রী রেহেনা বেগমও গুরুতর আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। স্থানীয়রা তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান ।

আহত রেহেনা বেগম অভিযোগ করেন, "ইউনুস হাওলাদার ও তার সহযোগীরা আমাদের বাড়িতে ঢুকে আমার স্বামী ও ভাবিকে কুপিয়ে হত্যা করে। আমাকেও মারার চেষ্টা করে তারা। দীর্ঘদিন ধরে ইউনুসের সঙ্গে আমাদের বিরোধ চলছিল" । নিহত শহিদুল ইসলাম স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক আহ্বায়ক ছিলেন এবং এলাকায় সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন ।

ইন্দুরকানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মারুফ হোসেন জানান, প্রতিপক্ষের সঙ্গে পরকীয়া সংক্রান্ত বিরোধকে এই হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে ।

এই ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কীভাবে এত নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটলো এবং কেনইবা দীর্ঘদিনের বিরোধ নিরসনে স্থানীয় প্রশাসন কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি ।

গত কয়েক মাসে ইন্দুরকানীতে এটাই প্রথম কোনো ইউপি সদস্যকে লক্ষ্য করে হত্যাকাণ্ড নয়। এর আগেও পারিবারিক বিরোধ ও জমি সংক্রান্ত বিবাদকে কেন্দ্র করে একাধিক সহিংস ঘটনা ঘটেছে এই উপজেলায় ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হামলাকারীদের মধ্যে ইউনুস হাওলাদারকে চিহ্নিত করা গেছে। তবে বাকি সন্দেহভাজনরা এখনো পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। এলাকাবাসীর আশঙ্কা, এই হত্যাকাণ্ডের পর দুই পক্ষের মধ্যে নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়তে পারে ।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে দ্রুততম সময়ে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে ।