প্রকাশ: ১৮ আগস্ট ২০২৫, ১১:১০
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজের ওয়াকিটকিতে দেওয়া নির্দেশ ফাঁসের অভিযোগে অমি দাশ নামে এক পুলিশ কনস্টেবলকে গ্রেফতার করেছে খুলশী থানা পুলিশ। রবিবার দিবাগত রাতে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত অমি দাশ সিএমপির টেলিকম ইউনিটের কনস্টেবল। প্রেষণে তিনি খুলশী থানায় কর্মরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়ায় এবং বাবার নাম রাজিব দাশ। সিএমপির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
১২ আগস্ট সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ ওয়াকিটকির মাধ্যমে সদস্যদের উদ্দেশ্যে অস্ত্রধারীদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলায় পুলিশের এক কর্মকর্তা গুরুতর আহত হওয়ার পরপরই এই নির্দেশ দেওয়া হয়।
কমিশনারের নির্দেশনামূলক সেই বার্তা একজন কর্মকর্তা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। এতে বিব্রত অবস্থায় পড়েন চট্টগ্রামের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তারা। গোপনীয় বার্তা বাইরে ফাঁস হওয়ায় দ্রুত তদন্ত শুরু হয় এবং অমি দাশকে শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়।
ঘটনার সূত্রপাত ১১ আগস্ট দিবাগত রাত দুইটার দিকে। সল্টগোলা ক্রসিং ইশান মিস্ত্রি হাট সংলগ্ন সড়কে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিল করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় বিক্ষোভকারীদের হামলায় পুলিশের বন্দর থানার উপ-পরিদর্শক আবু সাঈদ গুরুতর আহত হন।
এরপর পরদিন কমিশনার ওয়্যারলেস বার্তায় জানান, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে যে প্রাধিকার ছিল, সেই অনুযায়ী সব পুলিশ টহল ও মোবাইল টিমকে অস্ত্র ও লাইভ অ্যামুনিশন বহন করতে হবে। আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়া কোনো ফোর্স মাঠে যাবে না বলে নির্দেশ দেন তিনি।
কমিশনার আরও বলেন, শুধুমাত্র রাবার বুলেটে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। অস্ত্র বা ধারালো কিছু দিয়ে পুলিশকে আক্রমণ করা হলে সঙ্গে সঙ্গে গুলি চালাতে হবে। তিনি স্পষ্ট করে দেন, আত্মরক্ষার অধিকার অনুযায়ী পুলিশ সদস্যরা অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবেন।
এই নির্দেশনার ভিডিও ফাঁস হওয়ার পর তা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। পুলিশের উচ্চপর্যায় বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে তদন্তে নামে এবং অবশেষে কনস্টেবল অমি দাশকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশের ভেতরে গোপনীয় বার্তা ব্যবস্থাপনা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।