প্রকাশ: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৫৪
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-৪ আসন থেকে কেটে ফরিদপুর-২ আসনে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তে এলাকাবাসী ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে হাজার হাজার মানুষ ভাঙ্গার বিভিন্ন এলাকা, যেমন পুকুরিয়া, মাধুপুর, মনসুরাবাদ, নওপাড়া, হামিরদী, সুয়াদি, ভাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড ও রেললাইন অবরোধ করে। তারা গাছ ফেলা, টায়ার জ্বালানো এবং মহাসড়ক অবরোধের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানায়, যার ফলে চারদিকে যানজট তৈরি হয় এবং উভয় পাশে ২০ থেকে ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত যানবাহন আটকা পড়ে। এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা এবং দক্ষিণবঙ্গের ঢাকার সঙ্গে ২১ জেলার পণ্য ও যাত্রীবাহী পরিবহণ বন্ধ হয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন ৩০০ আসনের নতুন সীমানা প্রকাশ করেছে। এতে আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন ফরিদপুর-২ আসনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পূর্বের প্রতিবাদে শুক্রবার ৯ ঘণ্টা অবরোধ চলার পর প্রশাসনের অনুরোধে আন্দোলন স্থগিত হয়েছিল। তবে প্রশাসনের কাছ থেকে আশ্বাস না পাওয়ায় মঙ্গলবার থেকে আবারও আন্দোলন শুরু হয়েছে।
ভাঙ্গা উপজেলার তফসির আলম মিঠু জানান, ‘আমাদের প্রিয় দুটি ইউনিয়ন আলাদা করার ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা এটি মেনে নেব না। আমাদের ইউনিয়নগুলোকে ভাঙ্গা আসনের মধ্যেই ফিরিয়ে দিতে হবে। দাবি পূরণ না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি নেওয়া হবে।’ তিনি উল্লেখ করেন যে, স্থানীয়দের প্রতিরোধ লক্ষ্য করলে প্রশাসন অবশ্যই তাদের দাবির গুরুত্ব বুঝবে।
ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ওসি মো. রোকিবুজ্জামান জানান, ‘ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল ও ঢাকা হাইওয়ে এক্সপ্রেসওয়ে সহ সব মহাসড়কে মানুষ বিক্ষোভ করছে। ভাঙ্গা ইন্টারচেঞ্জ থেকে মুনসুরাবাদ বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত তারা সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চালাচ্ছেন।’
প্রতিবাদী এলাকাবাসী জানিয়েছে যে, তারা এই অবস্থান থেকে সরবে না যতক্ষণ না তাদের ইউনিয়নগুলো মূল আসনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তারা আশ্বাস দেয়, পরিস্থিতি যদি উপযুক্তভাবে সমাধান না হয়, তবে আন্দোলন আরও দীর্ঘ ও কঠোর আকার নেবে।
এই ঘটনার কারণে এলাকায় সামাজিক ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যবসায়ী ও পরিবহন মালিকরা জানিয়েছেন, তারা দীর্ঘ সময় ধরে এই বাধার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত। প্রশাসন স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
ভাঙ্গার বিক্ষোভটি স্থানীয় মানুষের রাজনৈতিক সচেতনতা ও ভোটাধিকার রক্ষার আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করছে। তারা নির্বাচনী সীমানা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সরাসরি অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাদের দাবির যথাযথ প্রতিফলন দেখতে চায়।