প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬:৩৯
ঝিনাইদহ ও যশোরের দুই যুবক লিবিয়ায় কাজ করতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন এবং মুক্তি পাওয়ার জন্য দুই পরিবারের কাছ থেকে মোট ১২ লাখ টাকা আদায় করা হয়। গত ১৯ এপ্রিল লিবিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল শহর মিসরাতা থেকে ফেরদৌস ও আলী হোসেনকে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ অপহরণ করে। এই গ্রুপে লিবিয়ার স্থানীয় মাফিয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশী দুর্বৃত্তরাও জড়িত ছিল।
অপহরণের পর দুই যুবককে লিবিয়ার বেনগাজি শহরে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তাদের সঙ্গে আরও অন্তত ২০ জন বাংলাদেশী শ্রমিককে আটকে রাখা হয়। মুক্তিপণ না দিলে সকলকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। পরিবারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগে অপহৃতরা কান্না জড়িত কন্ঠে তাদের নিরাপত্তার বিনিময়ে টাকা প্রেরণের অনুরোধ জানান।
প্রথম অর্থ প্রদানের পর আরও চার লাখ টাকা দুই পরিবার ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট শাখার মাধ্যমে পাঠায়। ঝিনাইদহের রিশখালী গ্রামের চাঁদ আলী ও যশোরের পলুয়া গ্রামের সালমা খাতুনের মাধ্যমে এই লেনদেন সম্পন্ন হয়। টাকা পাঠানো একাউন্টগুলোর অধিকাংশ পরিচালনা বাংলাদেশে হলেও অপহরণকারীরা লিবিয়ায় অবস্থান করছিল।
তদন্তে জানা যায়, কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার এক এজেন্ট ব্যাংক একাউন্টের সঙ্গে লিবিয়ার মাফিয়ার সরাসরি সংযোগ রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এছাড়াও যশোরের ছুটিপুর বাজারের ইসলামী এজেন্ট ব্যাংকের একাউন্টেও বিপুল অর্থ প্রেরণ করা হয়েছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা পাঠানো অর্থের প্রকৃত উদ্দেশ্য জানেন না।
ভুক্তভোগীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে লিবিয়ায় বাংলাদেশী দুর্বৃত্তরা মাফিয়ার সঙ্গে যোগসাজশ করে শ্রমিকদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করছে। যদিও অপহরণ লিবিয়ায় সংঘটিত হচ্ছে, মুক্তিপণের অধিকাংশ লেনদেন বাংলাদেশে সম্পন্ন হয়।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া বলেন, এ ধরনের অভিযোগ পাওয়ার পর ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তারা চাইলে মামলা করতে পারেন, যার মাধ্যমে তদন্ত করে বাংলাদেশে থাকা এজেন্টদের শনাক্ত করা সম্ভব।
ভুক্তভোগীরা পুলিশের তৎপরতার ওপর আশা প্রকাশ করেছেন যে, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে লিবিয়ায় অবস্থানরত এদেশীয় দুর্বৃত্তদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে। নিরাপদ ও দায়িত্বশীল পদক্ষেপ নেওয়া হলে এ ধরনের অপহরণ প্রতিরোধ করা সম্ভব বলে তারা মনে করছেন।