প্রকাশ: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১:৬
ডাকসু নির্বাচনের ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি কেন্দ্রে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্রদল–সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান এবং স্বতন্ত্র এজিএস প্রার্থী হাসিবুল ইসলামসহ তাঁদের অনুসারীরা সেখানে অবস্থান নেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, ভোট গণনায় কারচুপি হচ্ছে এবং প্রশাসন সঠিকভাবে প্রক্রিয়া প্রদর্শন করছে না।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপনসহ আরও বেশ কয়েকজন নেতা। তাঁরা দাবি করেন, টিএসসি কেন্দ্রে স্থাপন করা এলইডি স্ক্রিনে শুধু আংশিক তথ্য দেখানো হচ্ছে, ব্যালট বাক্স প্রদর্শন করা হচ্ছে না। এ নিয়ে তাঁরা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে চাইলে প্রশাসন বাধা দেয়।
আধা ঘণ্টার বেশি সময় টিএসসি প্রাঙ্গণে অবস্থান করার পর ভেতরে ঢুকতে না পেরে আন্দোলনকারীরা সেখান থেকে মিছিল বের করেন। মিছিলটি সিনেট ভবনের দিকে অগ্রসর হয় এবং এ সময় তাঁদের স্লোগানে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণ উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তাঁরা বারবার “ভোট চোর” স্লোগান দিয়ে কারচুপির প্রতিবাদ জানান।
ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা শুনেছি শিবিরপন্থী প্রার্থীরা ভোট গণনা দেখতে ভেতরে প্রবেশ করতে পারছেন। কিন্তু আমরা কেন পারছি না? তাহলে কি প্রশাসন পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে? আমরা বুঝতে পারছি না কেন এ ধরনের বৈষম্য হচ্ছে।”
তাঁর বক্তব্যে আরও অভিযোগ করা হয়, ইতোমধ্যেই বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে কারচুপির ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তাই প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এর ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
সন্ধ্যার দিকে টিএসসি ভোটকেন্দ্রের সামনে স্থাপিত এলইডি স্ক্রিন বন্ধ অবস্থায় দেখা যায়। উপস্থিত ছাত্রনেতাদের চাপের মুখে কয়েকজন সেটি চালু করার চেষ্টা করেন। পরে রাত পৌনে আটটার দিকে স্ক্রিনে পুনরায় ভোট গণনার তথ্য প্রদর্শিত হয়।
এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ কিছুটা অশান্ত হয়ে ওঠে। প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চালালেও শিক্ষার্থীদের মধ্যে আস্থা ফেরাতে ব্যর্থ হয়। ফলে নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে বিভ্রান্তি ও উত্তেজনা আরও ঘনীভূত হয়েছে।
নির্বাচন ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তৈরি হওয়া এই অস্থিরতা ভবিষ্যতে পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে তা নিয়ে ব্যাপক জল্পনা তৈরি করেছে। অনেকেই মনে করছেন, স্বচ্ছতার অভাব থাকলে ডাকসুর গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে।