দলকে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত মাহমুদুল্লাহ

নিজস্ব প্রতিবেদক
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ২৬শে সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:৪৫ অপরাহ্ন
দলকে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত মাহমুদুল্লাহ

ত্রিদেশীয় সিরিজ শেষ। বৃষ্টির কারণে ফাইনাল পরিত্যক্ত হয়েছে। তাই বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন। বৃষ্টি স্নাত রাতে সংবাদ সম্মেলনে এলেন না অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তবে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন দলের সিনিয়র ক্রিকেটার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। নিয়মিত অধিনায়ক সাকিবের ইনজুরির কারণে বেশ কয়েকবারই মাহমুদুল্লাহর কাঁধে এসেছে নেতৃত্বের ভার। ক্রিকেট বোদ্ধাদের অনেকে মনে করেন তার হাতেই থাকতে পারে টাইগারদের ভার! বিষয়টি আবারো আলোচনায় এসেছে অধিনায়কত্ব নিয়ে সাকিবের অনাগ্রহ প্রকাশের কারণে। আফগানদের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের আগে ও পরে বেশ কয়েকবার অধিনায়কত্ব নিয়ে অনাগ্রহের কথা জানিয়েছেন সাকিব। শুধু তাই নয় বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও জানিয়েছেন সাকিব টেস্ট খেলতে চান না। হয়তো সেই কারণেই মাহমুদুল্লাহর দিকে ছুটে গেল প্রশ্নটা। সুযোগ এলে দলের নেতৃত্ব নিতে প্রস্তুত কি তিনি? প্রশ্ন শুনে হাসলেও উত্তর দিলেন গুরুত্বসহকারেই। তিনি বলেন, ‘এটা আসলে একটা বড় দায়িত্ব, সম্মান। কারো মন্তব্য নিয়ে কিছু বলার নেই। তবে ভবিষ্যতে যদি এ ধরনের দায়িত্ব বা চ্যালেঞ্জ আসে, তবে কেন নয়?’ তবে মাহমুদুল্লাহ প্রস্তুত হলেও বিসিবি সাকিবের উপরই আপাতত ভরসা রাখছে। তবে সাকিব ‘না’ বলে দিলে হয়তো অন্য ভাবনা আসতে পারে!

ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রায় নিয়মিতই নেতৃত্ব দেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। বিশেষ করে বিপিএলে সফল অধিনায়কদের একজন তিনি। শুধু তাই নয় জাতীয় দলেও ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন সাকিবের ইনজুরির কারণে। শ্রীলঙ্কায় নিদাহাস ট্রফিতে তার নেতৃত্বেই ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি ফাইনালে ওঠে বাংলাদেশ। এমনকি টেস্টেও ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাই দলের এই সিনিয়র ক্রিকেটারের ওপর ভরসা রাখতে পারে বিসিবি। কারণ সাকিব মন্তব্য করেছেন- ‘অধিনায়কত্ব যদি না করতে হয় সেটিই সবচেয়ে ভালো হবে আমার জন্য।’ তার এই কথার পর বেশ সমালোচনাও শুরু হয়েছে। ক্রিকেট বোদ্ধারা মনে করেন জোর করে সাকিবের কাছে ভালো নেতৃত্ব পাওয়া কঠিন। এ নিয়ে বিসিবির পরিচালক ও জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজনও কড়া কথাই বলেন। তিনি বলেছেন, ‘সাকিব না চাইলে তরুণ কারো হাতে নেতৃত্ব দেয়া যেতে পারে। কারণ কেউ না চাইলে তার কাছ থেকে ভালো কিছু পাওয়া যায় না। সাকিব আমাদের সেরা অলরাউন্ডার হিসেবেই থাকুক। এতে ও চাপ মুক্ত হয়ে খেলতে পারবে।’

অন্যদিকে ক্রিকেটে নবীন আফগানদের বিপক্ষে টেস্ট হারের পর টাইগারদের নিয়ে শুরু হয়েছে কঠিন সমালোচনা। সেই আগুনে ঘি পড়েছে ত্রিদেশীয় সিরিজে রশিদ খানদের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে হারের পর। যদিও জিম্বাবুয়েকে দুই ম্যাচ ও আফগানদের একটিতে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে সাকিবের দল। তবুও টাইগারদের খেলার ধরনের কারণে বন্ধ হয়নি সমালোচনা। বিশেষ করে আফগানদের বিপক্ষে তাদের চরমভাবেই ধুকতে দেখা গেছে। শেষ ম্যাচে মাত্র ১৩৮ রানের লক্ষ্য পেয়েও ৬ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়েছিল দল। সাকিবের ৭০ রানের ইনিংসে ভর করে শেষ পর্যন্ত জয় এলেও প্রশ্নবিদ্ধ হয় বাকিদের ব্যাটিং সামর্থ্য। এমনকি আফগানদের কাছ থেকে বাংলাদেশের অনেক কিছু শেখার আছে বলে মনে করেন অনেকেই। তবে মাহমুদুল্লাহ এ কথা মানতে নারাজ। তার মতে রশিদ খানদের বিপক্ষে নিজেদের ভুলের মাসুলই তারা দিয়েছে। তাই তাদের কাছে শেখার তেমন কিছুই নেই। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় না ওদের কাছ থেকে তেমন কিছু শেখার আছে। আমাদের ভুলের পরিমাণ বেশি ছিল এ কারণে ফল ওদের পক্ষে গেছে। পাশাপাশি ওদের কৃতিত্ব দিতে হবে, তারা ভালো ক্রিকেট খেলেছে। একই সময়ে আমরা খুব বাজে ক্রিকেট খেলেছি।’ বিশেষ করে টেস্ট পারফরম্যান্স নিয়ে দারুণ হতাশ মাহমুদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘টেস্টে আমাদের পারফরম্যান্স হতাশাজনক ছিল। বিশ্বাস করি এর চেয়ে ভালো খেলার সামর্থ্য আমাদের আছে। টেস্ট শেষে নিজেদের মধ্যে কথা হলো। তখন চিন্তা করলাম আমাদের ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আবার হেরে গেলাম। মনোবলে একটু পিছিয়ে ছিলাম। তবে সবার মধ্যে যে জয়ের স্পৃহা কাজ করেছে সেটা কাজে দিয়েছে। চেষ্টা থাকবে এটার জন্য পুনরাবৃত্তি না হয়, আমরা আগ থেকেই উপলব্ধি করে যেন সেভাবে খেলতে পারি।’