বরিশালে অস্ত্রসহ ৭ ডাকাত সদস্য গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক
এইচ.এম.এ রাতুল, জেলা প্রতিনিধি, বরিশাল।
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:৩৭ অপরাহ্ন
বরিশালে অস্ত্রসহ ৭ ডাকাত সদস্য গ্রেফতার

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে ডাকাতির সময় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্রসহ ডাকাতদলের ৭  সদস্যকে গ্রেফতার করেছে গৌরনদী থানা পুলিশ। পাশাপাশি এসময় তাদের কাছ থেকে লুন্ঠিত কিছু স্বর্ণালংকার ও টাকা উদ্ধার করা হয়।


বৃহষ্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিং এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার ওয়াহিদুল ইসলাম-বিপিএম।


তিনি জানান, গৌরনদী থানাধীন কেফায়েতনগর এলাকার একটি বসত বাড়িতে গত ১১ জুন মধ্যরাতে ডাকাতদল হানা দেয়। এসময় তারা বাড়ির জানালার গ্রিল কেটে ওই ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে এবং বাড়ির সকল সদস্যর হাত-পা ও মুখ কাপড়ের ওড়না দিয়ে বেধে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে স্বর্নালংকার ও মোবাইল ফোন, এবং নগদ টাকা লুন্ঠন করে। পরবর্তীতে এ ঘটনায় ওই বাড়ির বাসিন্দা তানিয়া বেগম বাদী হয়ে গৌরনদী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।


মামলার সূত্র ধরে তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ হেলাল উদ্দিনের নেতৃত্বে গৌরনদী থানা পুলিশের একটি টিম ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ডাকাতদলের ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করে। যারমধ্যে দুইজন ডাকাত সদস্য এরইমধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।


গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আফজাল হোসেন বলেন, টানা তিনদিনের অভিযানে ডাকাত দলের সর্দার বরগুনা জেলার আমতলী থানাধীন কলাগাছিয়া এলাকার আমজেদ হাওলাদারের ছেলে মোঃ দেলোয়ার হোসেন দিলু(৪৭) কে গ্রেফতার করা হয়।


পাশাপাশি তার সহযোগী বরিশালের গৌরনদী  থানাধীন চর-রমজানপুর এলাকার সেলিম সরদারের ছেলে রবিউল ইসলাম পারভেজ (২০), পটুয়াখালী সদর থানাধীন বড়বিঘাই ইউনিয়নের পসারবুনিয়া এলাকার আনোয়ার মীরার ছেলে মোতালেব মীরা পনু (৩৯), বরগুনা জেলার তালতলী থানাধীন ছোটবগির বেতিপাড়া এলাকার আঃ কাদের প্যাদার ছেলে হারুন ওরফে তৈয়ব আলী (৫৩) ও একই এলাকার  সৈয়দ ফকিরের ছেলে মোঃ আমিনুল ফকির (২৪), পটুয়াখালী সদর থানাধীন তিতকাটা এলাকার মোঃ সোহরাব সিকদারের ছেলে ও বরিশাল নগরের রুপাতলী চান্দুমার্কেট এলাকার বর্তমান বাসিন্দা মোঃ ছগির সিকদার ওরফে সবুজ (২৫) এবং ডাকাতিকালে লুন্ঠিত স্বর্নালংকার কেনাবেচার সহযোগী নোয়াখালী জেলার কোম্পানিগঞ্জ থানাদীন উত্তর চর কাকড়া এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে মোঃ শাহীন আলম (৩১) কে গ্রেফতার করা হয়।


ওসি বলেন, গ্রেফতার কৃতদের মধ্যে  রবিউল ইসলাম ওরফে পারভেজ ও মোতালেব মীরা ওরফে পনু গৌরনদী থানায় দায়েরকৃত ডাকিাতির মামলার ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে আদালতে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গতকাল প্রদান করেছেন।


এছাড়া গ্রেফতারকৃত ডাকাত দলের সর্দার মোঃ দেলোয়ার হোসেন ওরফে দিলু ও হারুন ওরফে তৈয়ব আলীর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ঢাকার পূর্ব জুরাইন এলাকার দুলাল স্বর্ণকারের মালিকানাধীন সুমাইয়া জুয়েলার্স নামক দোকান থেকে ডাকাতির ঘটনায় লুন্ঠিত স্বর্নালংকার উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের দেয়া তথ্যানুযায়ী ডাকাতি লুন্ঠিত স্বর্নালংকার কেনাবেচার সহযোগী মোঃ শাহীন আলমকেও গ্রেফতার করা হয়।


অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন)মোঃ শাজাহান হোসেন-পিপিএম বলেন, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে মোঃ দেলোয়ার হোসেন ওরফে দিলু, হারুন ওরফে তৈয়ব আলী, আমিনুল ফকির ও মো: ছগির সিকদার ওরফে সবুজ গণদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গৌরনদী থানাধীন কেফায়েতনগর এলাকার বাসিন্দা ও ডাকাতির মামলার সাথে জড়িত আবুল বাশার ফকির ওরফে ফটিক ফকির (২৯)মুদির দোকানে অভিযান চালানো হয়।


 বুধবার মধ্যরাতে চালানো ওই অভিযানে ফটিক ফকিরের দোকানের পাটাতনের নিচ থেকে একটি প্লাস্টিকের প্লাস্টিকের বস্তার মধ্য থেকে দেশীয় তৈরি একটি পিস্তল,আট রাউন্ড গুলি,একটি লোহার তৈরি রেঞ্জ,একটি প্লাস,একটি চাপাতি,একটি বাংলা দাও,দুটি ও নগদ ২ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।


এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনেও গৌরনদী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে জানিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(গৌরনদী সার্কেল)এসএম আল বেরুনী বলেন, গ্রেফতাররা আন্তজেলা ডাকাত দলের সদস্য বলে প্রাথমিক ভাবে জানাগেছে। তাদের নামে বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।