করোনাকালে শিক্ষার্থীদের মোবাইল আসক্তি বেড়েছে ৬৭ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
সাখাওয়াত জামিল সৈকত (অতিথি লেখক)
প্রকাশিত: বুধবার ৬ই অক্টোবর ২০২১ ১২:০৮ অপরাহ্ন
করোনাকালে শিক্ষার্থীদের মোবাইল আসক্তি বেড়েছে ৬৭ শতাংশ

মহামারী করোনায় দমবন্ধ পরিবেশে গত এক বছরে দেশের স্কুলশিক্ষার্থীদের মোবাইল আসক্তি বেড়েছে ৬৭ শতাংশ। এ সময়ে ৭০ শতাংশ শিশুই শারীরিক কোনো কাজ বা খেলাধুলার সুযোগ পায়নি। এতে বেড়েছে মানসিক নানা রোগ। ২১ জেলার শিক্ষার্থীদের নিয়ে গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য।


মহামারিতে দীর্ঘ বন্ধের মধ্যে নানা ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারে শিশু-কিশোরদের এমন আসক্তির প্রতিফলন মেলে একবছর ধরে চালানো এই গবেষণায়। যা চালানো হয় চট্টগ্রামসহ দেশের ২১ জেলায় ১ হাজার ৮০৩ স্কুলশিক্ষার্থীর ওপর।


গবেষণায় উঠে আসে ৬৮ শতাংশ শিক্ষার্থীই মোবাইলে আসক্ত। এছাড়া দিনের অধিকাংশ সময় নয় ভাগ শিক্ষার্থী কম্পিউটার স্ক্রিনে আর আটভাগ শিক্ষার্থী ট্যাবে সময় ব্যয় করে। এই আসক্তির মধ্যে মাত্র ২৫ ভাগ শিক্ষার্থী তা ব্যবহার করেছে অনলাইন ক্লাসের জন্য। আর ৪০ ভাগ কার্টুন, নাটক ও চলচ্চিত্র দেখে, ২৭ ভাগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার এবং ১৭ ভাগ আসক্ত বিভিন্ন গেমসে। গেল বছর ৭০ ভাগ শিক্ষার্থীই খেলাধুলার অবকাশ পায়নি। এরমধ্যে ৫০ শতাংশই বের হতে পারেনি বাইরে।


চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড.অলক পাল জানান, আমরা দেখেছি যে শহরের ছেলে-মেয়েরা অনেক বেশি নির্ভরশীল। যেসব কিশোর-কিশোরীরা অতিমাত্রায় স্মার্টফোন নির্ভরশীল তাদের অভিভাবকদের এ বিষয়ে তাদের ম্যানেজমেন্টের ব্যাপারে অনেক বেশি সচেতন হওয়া দরকার।


স্বাস্থ্যগত ভয়াবহ ক্ষতির দিকটিও উঠে আসে এই গবেষণায়। তাতে, দেখা যায় আগে যেখানে জ্বর-সর্দি, ডায়রিয়ার মতো রোগব্যাধিতে বেশি আক্রান্ত হতো শিক্ষার্থীরা, গত দেড় বছরে মাথাব্যথা, দৃষ্টিশক্তি জটিলতা, ঘুমের সমস্যা, বিষণ্ণতা ও খিটখিটে মেজাজের মতো ব্যাধি দেখা যাচ্ছে বেশি।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. এস এম মাহবুবুর রশিদ জানান,আমরা মনে করি গেজেটের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি, সেইসঙ্গে শারীরিক কর্মকাণ্ডের সুযোগ না পাওয়া,এ দুই মিলে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।এ সমস্যাটি যদি দীর্ঘমেয়াদী হয় তাহলে আমাদের ভবিষ্যতের জন্য অবশ্যই তা আশঙ্কার একটি কারণ হয়ে দাঁড়াবে।


মোবাইল বা গেজেট আসক্তির এই হার ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। তবে সবচেয়ে কম মাদরাসা এবং আদিবাসী শিক্ষার্থীদের।