দেবীদ্বারে ‘বই উৎসবে’ মতবিনিময় ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তিপ্রদান

নিজস্ব প্রতিবেদক
শফিউল আলম রাজীব, উপজেলা প্রতিনিধি - দেবীদ্বার, কুমিল্লা
প্রকাশিত: রবিবার ১লা জানুয়ারী ২০২৩ ০৮:৩৩ অপরাহ্ন
দেবীদ্বারে ‘বই উৎসবে’ মতবিনিময় ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তিপ্রদান

দেবীদ্বারে ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই বিতরণ ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তিপ্রদান উপলক্ষ্যে অভিভাবক প্রতিনিধিদের মতবিনীময় সভা করা হয়েছে।


রোববার সকাল ১০টায় দেবীদ্বার পৌর এলাকার বারেরা নিজাম উদ্দিন ফকির বাড়ির আলহাজ্ব আঃ জব্বর আলী সরকার ইবতেদায়ী মাদ্রাসায় ওই অনুষ্ঠান করা হয়।


বই বিতরণ, কৃতি শিক্ষার্থীদের বৃত্তিপ্রদান ও অভিভাবক প্রতিনিধিদের মতবিনীময় সভায় মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদ সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুস সামাদ সরকারের সভাপতিত্বে এবং মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হাজী আব্দুর রশীদ মাষ্টারের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন সাংবাদিক এবিএম আতিকুর রহমান বাশার, বিশেষ অতিথি ছিলেন, মাওলানা আব্দুস সালাম খন্দকার। অন্যান্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন, মোঃ বিল্লাল হোসেন, শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম, শিক্ষক মোঃ ফয়েজ উল্লাহ, শিক্ষক মরিয়ম আক্তার, শিক্ষক বেলী আক্তার, সমাজ সেবক আবু কাউছার নিজামী প্রমূখ।


আলোচকরা প্রচার বিমূখ মহীয়সী ধার্মিক নারী শাহীদা খানমের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, মহীয়সী এ ধার্মিক নারী তার পিতার এলাকার ধর্মীয় শিক্ষার উন্নয়নে এ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছেন। প্রতিষ্ঠার ৩৪ বছর ধরে এ মাদ্রাসাটি এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে। মসজিদ, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠাই নয়, তিনি গৃহহীনদের বসবাসের ঠিকানা, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের বই, খাতা, কলম, পোষাক এবং বৃত্তি প্রদান, অসচ্ছল পরিবারের স্বচ্ছলতা আনয়নে কর্মসংস্থান, অসুস্থ্যদের চিকিৎসা ব্যয়, কণ্যা দায়গ্রস্ত পিতার কণ্যাদানে, বস্ত্রহীনদের বস্ত্র, খাদ্যহীনদের খাদ্য সরবরাহ এমনকি বিশুদ্ধ পানি পানে টিউবয়েল প্রদান করে আসছেন। তাছাড়া তিনি কোরবানী ঈদে পশু কোরবানীতে অক্ষমদের জন্য পশু কোরবানীর ব্যবস্থা লোক চক্ষুর অন্তরালে করে আসছেন। পিতার নামে প্রতিষ্ঠিত আলহাজ্ব আঃ জব্বর আলী সরকার ইবতেদায়ী মাদ্রাসার প্রয়োজনীয় আসবাব সামগ্রী, সকল শিক্ষার্থীদের বই, খাতা, কলম, পোষাক এবং মেধাবীদের বৃত্তি প্রদান, শিক্ষকদের বেতন ভাতা প্রদান, নিজ নামে প্রতিষ্ঠিত নিজাম উদ্দিন ফকির বাড়ি শাহীদা খানম জামে মসজিদের ইমাম, মোয়াজ্জেমের বেতন ভাতা, সামাজিক বিভিন্ন কর্মকান্ডে আর্থিক সহায়তাদান করে আসছেন।


আলোচকরা অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে নিশ্চিন্তে থাকবেন না। সন্তানরা কখন বিদ্যালয়ে আসে, ছুটির পর যথাসময়ে বাড়ি ফিরছে কিনা, কোন ধরনের বন্ধুদের সাথে মেলা-মেশা বা খেলাধূলা করে, যথা সময়ে পড়ার টেবিলে থাকে কিনা এবং মোবাইল ব্যাবহার করে কিনা এসবদিকে নজর রাখতে হবে। তাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাদানের পাশাপাশি আদব- কায়দা, ভদ্রতা, নিয়মানুবর্তীতা মেনে চলার যোগ্য করে তুলতে হবে। তাদের মানবিক শিক্ষাদানে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। স্বাস্থ্য ও মনন বিকাশে ক্রীড়া, সংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধ, ইতিহাস- ঐতিহ্যের উপর জ্ঞানার্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখতে হবে। তারা যেন শিক্ষা শেষে অমানুষ না হয়ে মানুষের মতো মানুষ হতে পারে, তাদের শিক্ষা, মেধা, শ্রম যেন উৎস্বর্গ করে মানুষ ও বিশ্ব মানবতার কল্যানে।


আলোচনা শেষে অতিথিরা প্রথম শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের হাতে বই ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তিপ্রদান করা হয়।