হরিণাকুন্ডু শিক্ষা অফিসের সহকারীর বিরুদ্ধে জাল সনদ সরবরাহের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
আতিকুর রহমান, জেলা প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১৪ই নভেম্বর ২০২৩ ০৭:৪৯ অপরাহ্ন
হরিণাকুন্ডু শিক্ষা অফিসের সহকারীর বিরুদ্ধে জাল সনদ সরবরাহের অভিযোগ

হরিণাকুন্ডু উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে জাল সনদ সরবরাহকারী চক্রের সন্ধান মিলেছে। এই চক্রের প্রধান হচ্ছে হরিণাকুন্ডু মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী মুকুল মিয়া। মুকুল মিয়ার সরবরাহকৃত জাল সনদে হরিণাকুন্ডু ও ঝিনাইদহ এলাকার বহু শিক্ষক কর্মচারী অবৈধ ভাবে চাকরী করে যাচ্ছেন। আবার অনেকে ধরা পড়ে চাকরী ঝুকির মধ্যে পড়েছে। 


এমন একজন শিক্ষক আরজান আলী। তিনি জোড়াদাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে কর্মরত আছেন। সম্প্রতি তার জাল বিএড সনদ ধরা পড়ার অফিস সহকারী মুকুল মিয়ার নাম ফাঁস হয়ে পড়েছে। 


জোড়াদহ স্কুলের প্রধান শিক্ষক জমির উদ্দীন জানান, সহকারী প্রধান শিক্ষক আরজান আলী ১৩ বছর বিএড জাল সনদ ধরা পড়ার পর ঝিনাইদহ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার তদন্তের উদ্যোগ নেন। তদন্তের অংশ হিসেবে আরজান আলীর রয়েল ইউনিভার্সিটির বিএড সনদ যাচাই বাছাই করার জন্য মাউশিতে চিঠি পাঠানো হলে গত অক্টোবর মাসে আরজান আলীর রয়েল ইউনিভার্সিটির বিএড সনদ বলে জানানো হয়।


 এদিকে এ ঘটনায় শিক্ষক আরজান আলীকে শোকজ করা হলে তিনি স্কুল পরিচালনা কমিটির কাছে আত্মপক্ষ সমর্থনে লিখিত বক্তব্য দিন। আর সেখানেই জাল সনদ সরবরাহকারী হিসেবে হরিণাকুন্ডু উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী মুকুল মিয়ার নাম উঠে আসে। 


মুকুল মিয়া দুইজন সাক্ষির উপস্থিতিতে আরজান আলীর কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকার বিনিময়ে জাল বিএড সনদ সরবরাহ করেন। 


এদিকে হরিনাকুন্ডু উপজেলার পার ফলসী দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক নিয়োগ ও শিক্ষকের জাল সার্টিফিকেট সরবরাহকারী হিসেবেও মুকুলের নাম আলোচিন হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে মুকুল মিয়া ২০ বছর ধরে হরিণাকুন্ডুতে চাকরী করছেন। তার বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সাগাটা উপজেলায় হলেও এখানে কি মধু আছে তা নিয়ে শিক্ষকরা প্রশ্ন তুলেছেন। 


২০১৭ সালে মুকুলের দুর্নীতি নিয়ে পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হলে তাকে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে বদলি করা হয়। কিন্তু ৬ মাসের মাথায় তিনি আবারো হরিণাকুন্ডুতে বদলী হন। 


জাল সনদ সরবরাহের বিষয়ে মুকুল মিয়া বলেন, এসব বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। আমি কোন জাল সনদ কাউকে দিই না। সবই মিথ্যা অপপ্রচার। মকুল ২০ বছর ধরে হরিণাকুন্ডু শিক্ষা অফিসে চাকরী করার বিষয়ে বলেন, “হরিণাকুন্ডুর মায়ায় আমি এখান থেকে বদলী হতে পারি না”। 


হরিণাকুন্ডু উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর বারী বলেন, আমি আসার পর থেকেই তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ জানতে পেরে শক্ত হাতে দমন করেছি। জাল সনদের কথা নতুন করে জানলাম। তবে লিখিত কোন অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।