আত্রাইয়ে গ্রামীণ সড়কের স্ট্রীট সোলার লাইট অধিকাংশই অকেজো, বাড়ছে অপরাধ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই প্রতিনিধি, নওগা:
প্রকাশিত: শনিবার ১৬ই মার্চ ২০২৪ ০৪:২০ অপরাহ্ন
আত্রাইয়ে গ্রামীণ সড়কের স্ট্রীট সোলার লাইট অধিকাংশই অকেজো, বাড়ছে অপরাধ

নওগাঁর আত্রাইয়ে দেখভালের অভাবে কাক্ষিত সুফল মিলছে না উপজেলার বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানের সড়কের পাশে স্থাপন করা সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পে। বছরের পর বছর ধরে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামীণ সড়ক ও জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানের সোলার স্ট্রীট লাইটগুলো নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। লাখ লাখ  টাকার সৌর সড়কবাতির প্রায় ৪০ শতাংশই নষ্ট হয়ে গেছে। সড়কের বাতিগুলো নষ্ট হওয়ার কারণে রাতের অন্ধকারেই চলাচল করতে হচ্ছে গ্রামীণ জনপদের হাজার হাজার মানুষদের। রাতের আধাঁরে ঘটছে চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড। 


অপরদিকে নষ্ট হওয়া গ্রামীণ সড়কের শত শত সোলার স্ট্রীট লাইটগুলো পুনরায় মেরামত করার কোন বিকল্প ব্যবস্থা আছে কি না এমটি প্রশ্ন উপজেলার সচেতন মহলের।


সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ সড়কগুলোর অনেক স্থানে অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। ফলে সন্ধ্যার পর থেকে এই সড়কের বিভিন্ন স্থানে বসে মাদক সেবীদের আখড়া আবার কোথাও ওঁৎ পেতে বসে থাকে চোরের দল। প্রায় শোনা যায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চুরির ঘটনা ঘটেই চলেছে। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষদের অন্ধকারের মধ্যে চলাচল করতে হচ্ছে। সরেজমিনে উপজেলার রসুলপুর ,ভবানীপুর ও শাহাগোলা এলাকার অধিকাংশ গ্রামীণ সড়কে স্থাপন করা সোলার স্ট্রীট লাইটগুলোর একই দশা। 


আত্রাই উপজেলার ৮ টি ইউনিয়ন এসব সোলার লাইটগুলোর দেখভালের দায়িত্ব কার এমন প্রশ্ন এখন স্থানীয় সাধারণ মানুষের!


উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস সুত্রে  জানা যায়,  দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা অধিদপ্তরের গ্রামীণ অবকাটামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচীর আওতায় ২০১৭-১৮ অর্থ বছর থেকে পরবর্তী কয়েকটি অর্থ বছরে একটি প্রতিষ্ঠান এই উপজেলায়  স্ট্রিট সোলার ও হোম সোলার স্থাপন করেন।  


এ ব্যাপারে উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের ভ্যানচালক এনামুল বলেন আগে রাস্তার লাইটগুলো জ্বলতো তাই রাতের বেলাতেও যাত্রী নিয়ে চলাচল করা যেতো কিন্তু দীর্ঘদিন লাইটগুলো নষ্ট হওয়ার কারণে উপজেলার কিছু কিছু সড়কে রাতের আঁধারে চলাচল করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। দ্রুত যদি এই লাইটগুলো নতুন করে মেরামত করা না হয় তাহলে লাইটের পাইপগুলোও আর ক’দিনের মধ্যে উধাও হয়ে যাবে।


শাহাগোলা গ্রামের বাসিন্দা আজাদ সরদার বলেন বছরের পর বছর নষ্ট হওয়া সড়ক বাতিগুলো মেরামত না করায় উপজেলার সুবিধা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন গ্রামীণ জনপদের লাখ লাখ বাসিন্দারা। এছাড়া প্রায়ই রাতের আধাঁরে আমরা চুরি চক্রের কবলে পড়ছি। ইতিমধ্যে উপজেলার প্রায় অর্ধশত স্থানে ব্যাটারি চালিত ভ্যান, গরু এমনকি অনেকের ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়ি চুরি হওয়ার নজিরও সৃষ্টি হয়েছে। তাই দ্রুত জনগুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ সড়কটির বাতিগুলো মেরামত করে আলো জ্বালানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।   

 

এ বিষয়ে শাহাগোলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এসএম মামুনুর রশিদ বলেন, তার ইউনিয়নে সোলার প্যানেলে গুরুত্বপূর্ণ ল্যাম্প পোস্টগুলো অধিকাংশ নষ্ট হয়ে আছে। যার ফলে রাতের বেলা বিশেষ করে গাড়ি চালক ও পথচারিদের চলাচলে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, গত এক মাসের মধ্যে আমার এ ইউনিয়নে প্রায় দশটি স্পটে চুরির ঘটনা ঘটেছে।


এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সঞ্চিতা বিশ^াস মুঠোফোনে বলেন, উপজেলার কোন কোন স্থানের স্ট্্রীট সোলার লাইটগুলো নষ্ট অবস্থায় আছে তা নির্ধারণ করে পুনরায় তা কোন প্রজেক্টর মাধ্যমে মেরামত করা হবে এমটিই জানান তিনি।