রমজান ও তারাবীহ নামাজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য (১২তম তারাবীহ)

নিজস্ব প্রতিবেদক
ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার ২২শে মার্চ ২০২৪ ০৫:২৭ অপরাহ্ন
রমজান ও তারাবীহ নামাজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য (১২তম তারাবীহ)

মাহে রমজানের সওগাতঃ মহান আল্লাহ আরবী ১২ মাসের মধ্যে রমজান মাসকে উত্তম, পবিত্র মহিয়ান, সম্মানিত ও শ্রেষ্ঠতম মাস হিসেবে পরিগনিত করেছেন। এর কারন হচ্ছে এ মাসে কুরআন নাজিল হয়েছে। আর ধনী দরিদ্রের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ, দায়িত্ব কর্তব্য অধিকার ও সম্পাদের সুষ্ঠু সুষম ব্যবহারের বিধান যাকাত ফরজ হয়েছে। যাকাত হচেছ ইসলামী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মেরুদন্ড। সম্পদের সুষম বন্টন নিশ্চিত করার জন্যই ইসলাম প্রত্যেক মুসলমানকে যাকাত আদায়ের তাকিদ দিয়েছে। মানুষের হাতে সম্পদ পুঞ্জিভূত হয়ে পরলে সমাজে ও রাষ্ট্রে ব্যাপক অর্থনৈতিক বৈষম্য দেখা দেয়। ফলে মানুষের অভাব অনাটন বেড়ে যায়, আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটে, মানুষের নৈতিক চরিত্রের বিপর্যয় ঘটে। এ সকল সমস্যার সমাধান ও শান্তি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্যই আল্লাহ যাকাতের বিধানকে ফরজ করেছেন। 


মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন- "তাদের সম্পদ থেকে যাকাত গ্রহন করুন, এর দ্বারা আপনি তাদেরকে পবিত্র এবং পরিশোধিত করবেন। (সূরা তাওবা ৯:১০৩)


নির্দিষ্ট ও নেসাব পরিমান এবং বর্ধনশীল সম্পদ যেমন সোনা, রূপা, গরু, ছাগল, মেষ, ভেড়া, ব্যাবসায়ী সম্পদ, ফসলি জমি, ভাড়া বাড়ী, সম্পদ, বিদেশে অবস্থিত সম্পদ, ব্যাংকে গচিছত সম্পদ বা টাকা, খনিজ সম্পদ এক বছর মালিকানাধীন হলে তার উপর হিসাবান্তে ২.৫% হারে প্রতি বছর যাকাত দিতে হবে। এটি দেয়া যেমন অবশ্যক তেমনি ইসলামী রাষ্ট্রের জন্য আদায় করাও আবশ্যক। আমাদের বাংলাদেশ ইসলামী রাষ্ট্র নয় বিধায় প্রত্যেক মুসলমানের উপর নিজ পক্ষ থেকে যাকাত আদায় করে দেয়া ঈমানী ও নৈতিক দায়িত্ব কর্তব্য এবং ফরজ।


নিসাব পরিমান সম্পদঃ -"নিসাব" বলা হয় শরীয়া নির্ধারিত নিম্নতম সীমা বা পরিমানকে। এই পরিমান নির্ধারনে ব্যক্তির সর্বোমোট আয় থেকে যাবতীয় ব্যয় বাদ দেয়ার পর উদ্বৃত্ত্ব  অর্থ এবং তার পূর্বের সঞ্চয় ও উত্তারাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পদ যুক্ত হবে। প্রয়োজনীয় ব্যয় বাদে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপা ( প্রায় ৬১৩ গ্রাম) বা সাড়ে সাত তোলা সোনা (প্রায় ৮৮ গ্রাম) বা এর সমমূল্যের সম্পদকে "নিসাব "বলা হয়। 


কারো কাছে সাড়ে সাত তোলা সোনা বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপা থাকলে বা উভয়টি মিলে সাড়ে সাত তোলা সোনা বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমান অথবা সব সম্পদ মিলে সাড়ে সাত তোলা সোনা বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার সমমূল্যের সম্পদ থাকলে সে সম্পদের যাকাত দিতে হবে। মূল্য নির্ধারনের ক্ষেত্রে গরীরের জন্য যা অধিকতর লাভজনক তার মূল্য ধরতে হবে। বর্তমানে রূপার নেসাবই ধর্তব্য।


মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন-দূর্ভোগ মুশরিকদের জন্য যারা যাকাত দেয় না এবং তারা আখিরাতেও অবিশ্বাসী। (সূরা হা-মিম আস-সাজদা-৪১:৬-৭)


লেখা: মাওলানা মোহাম্মদ আমির হোসেন তালুকদার, অধ্যক্ষ, কাউনিয়া বালিকা আলিম মডেল মাদ্রাসা, বরিশাল।


চলবে....