প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:২৯
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর টানা হামলায় আবারও রক্তক্ষয়ী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, একদিনে অন্তত ৭২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে গাজা সিটিতেই প্রাণ গেছে ৫৩ জনের।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসন প্রায় দুই বছর ধরে অব্যাহত রয়েছে। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা সাড়ে ৬৪ হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছে ১ লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষ। এ ছাড়া প্রায় ২০ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে দক্ষিণের দিকে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন।
ইসরায়েলি সেনারা গাজা সিটির বিভিন্ন এলাকায় লিফলেট ও বার্তা দিয়ে মানুষকে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেয়। এসব বার্তায় বলা হয়, পূর্বের ওল্ড সিটি থেকে শুরু করে তুফা এলাকা এবং পশ্চিমে সাগর এলাকা পর্যন্ত হামাসকে পরাজিত করতে অভিযান চালানো হচ্ছে। জনগণকে নিরাপত্তার জন্য দ্রুত শহর ছেড়ে যেতে বলা হয়েছে।
এই নির্দেশনার পর থেকেই গত মঙ্গলবার থেকে দলে দলে মানুষ গাজা সিটি ছাড়তে শুরু করে। কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ গাধার পিঠে, কেউবা ছোট যানবাহনে করে দক্ষিণের দিকে ছুটে যাচ্ছেন। গাজা শহরের রাস্তাঘাটে এখন শুধু মানুষের আর্তনাদ আর ভয়াবহ দৃশ্য।
গাজা উপত্যকায় খাদ্য, পানি ও চিকিৎসাসহ জরুরি সহায়তা প্রবেশে দীর্ঘদিন ধরেই বাধা দিচ্ছে ইসরায়েল। এর ফলে মানবিক পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের অবস্থা সবচেয়ে করুণ।
এ পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ গেছে দুই হাজারেরও বেশি মানুষের। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হলেও তা এখনো কার্যকর হয়নি।
মানবিক বিপর্যয় ও ধারাবাহিক হামলার কারণে গাজার অধিকাংশ অবকাঠামো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। স্কুল, হাসপাতাল ও ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, তারা কোথাও নিরাপদ নন।
দুই বছর ধরে চলমান এই সংঘাত ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষের জীবনে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ তৈরি করেছে। আন্তর্জাতিক মহলের হস্তক্ষেপ ছাড়া এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তির কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না তারা।